নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় বৃহস্পতিবার বিকালে লাগা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের অধিকাংশই শিশু শ্রমিক বলে জানা যা গেছে। দীর্ঘ প্রায় ২০ ঘণ্টা পরও ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
ওই ভবনটির আগুন নিয়ন্ত্রণে আসা অংশে চলছে লাশের সন্ধান। একের পর এক ব্যাগ ভর্তি করে লাশ বের করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ইতোমধ্যে ৫০ জনেরও বেশি মৃতদেহ বের করা হয়েছে। এরমধ্যে অনেক লাশই শিশুদের। পাশাপাশি নারী ও পুরুষ শ্রমিকের লাশও রয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন ঘটনাস্থলে এ তথ্য জানান।
আব্দুল্লাহ আল আরেফীন বলেন, পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্সে করে আমরা ৪৯ জনের মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি ময়নাতদন্তের জন্য।
জানাযায়, ছয়তলা ভবনের চতুর্থতলা পর্যন্ত প্রবেশ করা গেছে। সেখান থেকেই পোড়া ধ্বংসস্তূপ থেকে এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে, এ ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এ নিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫২ জন। এছাড়া আহত হন আরও অন্তত ৫০ জন। এদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে। আগুনে নিহতদের কাউকেই শনাক্ত করার মতো উপায় নেই। আগুনে লাশগুলো এতটাই বিকৃত হয়েছে যে সেগুলো চেনার উপায় নেই। ভেতরে আরও মরদেহ থাকতে পারে, সেজন্য আরও তল্লাশিতে যাবেন বলে জানান ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
শ্রমিকরা জানান, সেজান জুস কারখানায় প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি শিফটে ৭০০ শ্রমিক কাজ করেন। সাত তলা ভবনে থাকা কারখানাটির নিচ তলার একটি ফ্লোরের কার্টন থেকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কালো ধোঁয়ায় কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা ছোটাছুটি শুরু করেন। কেউ কেউ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। আবার কেউ কেউ ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়তে শুরু করেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভুলতার কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুড বেভারেজ কারখানায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। শুক্রবার দুপুর নাগাদ আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। এখনো ভবনটি থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ভবনের যে অংশগুলোর আগুন নিভে গেছে সেগুলো থেকে পুড়ে যাওয়া মানুষের মরদেহ বের করে আনছে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন।