কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে আরও ১৮ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ১৫ জন করোনায় এবং তিনজন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। শুক্রবার (০৯ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে শনিবার (১০ জুলাই) সকাল ৮টার মধ্যে মারা যান তারা। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন।
এদিকে নতুন ৫৮৯ নমুনা পরীক্ষা করে ১৭৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। নতুন করে শনাক্ত হওয়া ১৭৬ জনের মধ্যে কুষ্টিয়া সদরের ৯৭ জন, দৌলতপুরের ১৮ জন, কুমারখালীর ১৭ জন, ভেড়ামারার ৩৭ জন, মিরপুরের তিনজন ও খোকসার চারজন রয়েছেন।
এখন পর্যন্ত জেলায় ৭০ হাজার ২০৯ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে ৬৭ হাজার ২৮৩ জনের। মোট শনাক্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৬১ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৩৭৯ জন।
বর্তমানে কুষ্টিয়ায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৩৭১ জন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২৬৮ জন ও হোম আইসোলেশনে আছেন ৩ হাজার ১০৩ জন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন, অধিকাংশ রোগীকে অক্সিজেন দেওয়ার দরকার হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বাড়ায় অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে কাড়াকাড়ি লেগে যাচ্ছে। অনেকেই ৪০ থেকে ৭০ ভাগ অক্সিজেন স্যাচুরেশন নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। তাদের অবস্থা জটিল। তাদের কমপক্ষে এক সপ্তাহের জ্বর, ঠান্ডা ও কাশি রয়েছে। এ রকম বেশির ভাগ রোগীই আসছেন জটিল অবস্থা নিয়ে। আর অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাওয়ার পর যেসব রোগী আসছেন, তাদের বাঁচানো কঠিন হচ্ছে। এ জন্য আগে থেকেই চিকিৎসাসেবা নিতে হবে। মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। অসচেতনতার কারণে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন বলেন, ২৫০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড এই হাসপাতালটিতে এখন শয্যার চেয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৪২২ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই ২৯২ জন। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৩০ জন। এখন পর্যন্ত চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট নেই। তবে শয্যা, নার্স, আয়া ও সুইপারের অভাব রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালটিকে ডেডিকেটেড হাসপাতাল ঘোষণার পর থেকে রোগীর চাপ বাড়তেই আছে। প্রয়োজনের তুলনায় লোকবল কম। এ জন্য চিকিৎসক, নার্স, আয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবাই চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিদিনই শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালেও রোগীর চাপ বাড়ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে।