তালেবানের দখলে বন্দর, প্রতিদিন ক্ষতি ৩২ হাজার ডলার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

তালেবান
প্রতীকী ছবি

আফগানিস্তানের কুন্দুজ প্রদেশের শের খান বন্দর পোর্ট তালেবান দখলে নেওয়ার পর থেকে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে দেশটির সরকারের। দৈনিক ২.৫ মিলিয়ন আফগানি (৩২ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি) রাজস্ব হারাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

সরকারের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় আফগানিস্তানের গণমাধ্যম টোলো নিউজ।

universel cardiac hospital

খবরে বলা হয়, যখন থেকে বন্দরের দখল নিয়েছে তালেবান এরপর থেকে সেখানে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রতিদিন ৩২ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

দ্য আফগান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট জানিয়েছে, তালেবান শের খান বন্দর পোর্ট এবং কাস্টমস অফিস দখলের পর থেকে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বন্দরটি তাজিকিস্তান সীমান্তে অবস্থিত।

চেম্বারের কর্মকর্তারা বলছেন, বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে উত্তরাঞ্চলের প্রদেশসমূহ বিশেষ করে কুন্দুজ প্রদেশের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শফিকুল্লাহ আতাই বলেন, বন্দরে কোনো কার্যক্রম চলছে না। এই এলকায় সংঘর্ষ চলছেই। ব্যবসায়ীরা বন্দরে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে রাজি নয়।

খবরে বলা হয়, এ বন্দরে প্রতিদিন ২শর বেশি যানবাহন কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের জন্য আসতো। কিন্তু বর্তমানে এ কার্যকম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।

কুন্দুজের প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য খালিদুদ্দিন হাকিমি বলেন, বন্দরের সব কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে তালেবান এবং তাদের বলেছে যারা কাজ করতে ইচ্ছুক তারা যেন দুইদিন পরে আসে। এরপর তাদের পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হবে।

সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, ইতোমধ্যে তালেবান ওই বন্দরের জন্য একজন পরিচালকও নিয়োগ দিয়েছে। একই সঙ্গে তারা ব্যবসায়ীদের কার্যক্রম শুরু করার জন্য বলেছে।

তালেবানের এক মুখপাত্র বলেন, আমরা এ বন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছি। দ্রুতই বন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে।

অর্থমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাফি তাবেহ বলেন, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ওই বন্দর থেকে ৪৭৬ মিলিয়ন আফগানি (৬০ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি ) রাজস্ব আয় করেছে সরকার।

কুন্দজ প্রদেশের শের খান বন্দর পোর্ট আফগানিস্তানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ। এ পথ হয়ে আফগানিস্তানে তাজিকিস্তান থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার মধ্যে কান্দাহার, কুন্দুজ, বাঘলান, হেরাত, গজনি, ফারইয়াব এবং ময়দান ওয়ারদাক প্রদেশের নানা স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে তালেবানের। ইতোমধ্যে দেশের ৮৫ শতাংশ এলাকা দখলের দাবি করেছে তালেবান।

যুক্তরাষ্ট্র ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করার ঘোষণা বাস্তবায়নের প্রায় শেষ দিকে রয়েছে।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আফগানিস্তান থেকে দেশটি ‘৯০ শতাংশের বেশি’ সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ২০০১ সালে আফগানিস্তানে আগ্রাসন শুরু করে। দুই দশকের এই যুদ্ধে মার্কিন সামরিক বাহিনীর দুই হাজার তিনশর বেশি সদস্য প্রাণ হারান। আহত হন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর হাজার হাজার সেনা। পাশাপাশি অগনতি আফগান নাগরিক যুদ্ধের শিকারে পরিণত হয়। এই যুদ্ধের জন্য খরচ করা হয় দুই ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ।

শেয়ার করুন