চলমান বিধিনিষেধে বিধিনিষেধের মধ্যে গণপরিবহন ছাড়া রাজধানী ঢাকার সড়কে প্রায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ব্যক্তিগত পরিবহন ও জনসাধারণের বাইরে বের না হওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর নির্দেশনা থাকালেও তা মানা হচ্ছে না। অধিকাংশ চেকপোস্ট দিয়ে বাধাহীন গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে।
সড়কে গাড়ির চাপ বেশি থাকায় কোথাও কোথাও যানজটও দেখা গেছে। এ ছাড়া রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে সিগন্যালে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হয়েছে যানবাহানগুলোকে। সোমবার (১২ জুলাই) রাজধানী বিভিন্ন স্থানে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর মিরপুর, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, আসাদগেট, গ্রীন রোড, নিউমার্কেট, গুলিস্তান, তেজঁগাও, কাকরাইল, বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে মূল সড়কে বাধাহীনভাবে প্রায় সব ধরনের পরিবহন চলাচল করছে। শুধুমাত্র গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। অনেক সিএনজি, মোটরসাইল, প্রাইভেট ও মাইক্রোবাসে যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। তাদের রোধ করতে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হলেও অধিকাংশ স্থানে তা ফাঁকা দেখা গেছে।
মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের সামনে চেকপোস্টে ৭-৮ জন পুলিশ সদস্য উপস্থিত থাকলেও এ পথ দিয়ে অবিরত যানবাহন চলাচল করছে। মাঝে মাঝে দু/একটি গাড়ি আটকে বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে। সেখানে দায়িত্বরত অধিকাংশ পুলিশ সদস্যকে বিশ্রামে থাকতে দেখা গেছে।
তবে চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশের ওসি দুলাল হোসেন বলেন, ‘রাস্তায় চলাচলরত অধিকাংশ পরিবহনকে আটকে বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে। যারা যৌক্তিকতা দেখাতে পারছে তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে, বাকিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘শুরুতে অনেকে বিনা কারণে বা লগডাউন দেখতে ঘরের বাইরে বের হলেও মানুষ এখন সচেতন হয়ে গেছে। বিনা করণে বাসার বাইরে বের হওয়া কমে গেছে।’
পাশেই টেকনিক্যাল মোড়ের আগে পুলিশের আরেকটি চেকপোস্ট রয়েছে। সেখানে পুলিশ সদস্যরা দাঁড়িয়ে থাকলেও কোনো যানবাহানকে জিজ্ঞাসাবাদ না করে যান চলাচল দেখছিলেন। সেখানে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিত হওয়ার পর পুলিশ সদস্যরা তাৎপর হয়ে ওঠেন। এ সময় একটি রিকশা আটক করে যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি আত্মীয়র বাসা থেকে নিজের বাসায় যাচ্ছেন বলে জানান। এ জন্য তাকে ২০ মিনিট আটকে রেখে পরে ছেড়ে দেয়া হয়।
এখানে দায়িত্বরত ট্রফিক সার্জেন্ট মানিক আহমেদ বলেন, ‘অনেকে অহেতুক বাসার বাইরে বের হওয়ার জন্য ভুয়া ডাক্তারি কাগজপত্র তৈরি করেন এবং তা দেখিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করছেন। গতকাল এমন ঘটনা ধরা পড়লে একটি প্রাইভেটকারকে ডাম্পিং দেয়া হয়। সবসময় ভুয়া কাগজপত্র শনাক্ত করা সম্ভব হয় না বলে অনেককে ছেড়ে দিতে হচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, বিনা করণে কাউকে যেতে দেয়া হচ্ছে না। সকাল থেকে টানা ডিউটি করায় পুলিশ সদস্যা ক্লান্ত হওয়ায় কিছু সময় বিশ্রাম নেন। সে সময়টা কিছুটা ঢিলেঢালা হতে পারে বলেও জানান তিনি।
এদিকে তেজাঁগাওয়ে অন্যান্য দিন কড়া নজরদারি থাকলেও সোমবার ঢিলেঢালা দেখা গেছে। কোনো ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই ব্যক্তিগত ও যাত্রী আনা-নেয়া করা পরিবহনগুলো চলাচল করছে। মাঝে মাঝে একটি বা দুটি গাড়ি আটক করে গাড়ির কাগজপত্র চেক করতে দেখা গেছে। একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে ঢাকার বিভিন্ন প্রধান সড়কগুলোতে।