বাংলাদেশ রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনের সব টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হয়েছে। তবে কমিউটার ট্রেনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে কাউন্টারের মাধ্যমে। ট্রেনগুলোর সব টিকিট এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে। কিন্তু এরপরেও লাইন ছাড়ছেন না সাধারণ যাত্রীরা। টিকিটের আশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সকালে কমলাপুর স্টেশনের কমিউটার ট্রেনের কাউন্টারের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন। গতকাল মধ্যরাত থেকে তারা টিকিটের জন্য কাউন্টারে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করেও একটি টিকিটের আশায় তাদের এই অপেক্ষা। কিন্তু এরপরেও টিকিট পাবেন কিনা তার কোন নিশ্চয়তা দিতে পারছে না কেউ। স্টেশন থেকে বলা হয়েছে, তারা আর কোন টিকিট বিক্রি করবেন না। সব আসনের টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে।
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ার গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের সব আসনের টিকিট শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু মানুষকে তা কোনোভাবেই বোঝানো যাচ্ছে না। তারা গত রাত থেকে কমিউটার ট্রেনের টিকিট কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বৃষ্টির মধ্যেও তারা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেটের জন্য অপেক্ষা করছেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি দাঁড়িয়ে বা আসন ছাড়া কোনও ট্রেনের টিকিট দেওয়া হবে না।
জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের বলাকা কমিউটার, দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার, মহুয়া কমিউটার, কর্ণফুলী কমিউটার, রাজশাহী কমিউটার, জামালপুর কমিউটার ও তিতাস কমিউটার বেসরকারিভাবে পরিচালিত হচ্ছে। ট্রেনগুলোর পরিচালনা করেন মেসার্স এস আর ট্রেডিং ও এলআর ট্রেডিং। বেলা ১১টার সময় এই ট্রেনগুলোর কাউন্টারের সামনে বিপুল পরিমাণ মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন টিকিট দেওয়া হলে স্বাস্থ্যবিধি পালনের কোনও সুযোগ থাকবে না। সব যাত্রীকে দাঁড়িয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে যেতে হবে।
কোলের শিশুকে নিয়ে কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন সুরমা বেগম। তিনি বলেন, অনলাইনে অনেক চেষ্টা করেও দুটি টিকিট নিতে পারেনি। এখন কমিউটার ট্রেনের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছি। ভোর চারটায় এসেছি। কিন্তু টিকিট পাব কিনা জানি না। যে করে হোক বাড়ি যেতেই হবে।
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একজন আনসার সদস্য বলেন, রাজশাহী ও জামালপুর কমিউটার ট্রেনের টিকিট দিতে পারে। কারণ যে পরিমাণ মানুষ তাদেরকে টিকিট না দিলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। টিকিট না পেয়ে অনেকেই কাউন্টারের জানালা ও দেয়ালে লাথি-ঘুষি মেরেছেন। মাঝে মধ্যে হৈচৈ করে চিৎকার করতে থাকেন।
এদিকে আন্তঃনগর ট্রেনগুলো যথাসময়ে ছেড়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ার। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ১৫টির মতো ট্রেন ছেড়ে গেছে। প্রতিটি ট্রেনই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করা হচ্ছে। এসময় কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসকে ২ নং প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এটি পৌনে ১১টায় ছেড়ে যায়। একই সময়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ৯ নং প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যায়।