মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও দেশে ১৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় প্রাণঘাতী ভাইরাসটি আরও তিন হাজার ৬৯৭ জনের দেহে শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
নতুন মৃতদের নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৮ হাজার ৬৮৫ জনে। নতুন শনাক্তদের নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৪০ হাজার ২০০ জনে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৮৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাদের মধ্যে শনাক্তের হার ৩২.১৯ শতাংশ। এর আগে ২৪ ঘণ্টায় ২৪ হাজার ৯৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে শনাক্তের হার ছিল ৩০.৪৮ শতাংশ। অর্থাৎ শনাক্ত কম হলেও শনাক্তের হার বেড়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৮ হাজার ৫৬৬ জন। আর মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা নয় লাখ ৬৯ হাজার ৬১০ জন। এ পর্যন্ত করোনা শনাক্তের গড় হার ১৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ। সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ০৪ শতাংশ। করোনায় মৃত্যু হার ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
নতুন করে মারা যাওয়া ১৮৭ জনের মধ্যে ১১৭ জন পুরুষ আর ৭০ জন নারী। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৭৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩ জন, রাজশাহী বিভাগের ১০ জন, খুলনা বিভাগের ৪৪ জন, বরিশাল বিভাগের ১১ জন, সিলেট বিভাগের চার জন, রংপুর বিভাগের ১৫ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের পাঁচজন।
এর মধ্যে দুইজন বাসায় মারা গেছেন। বাকিদের ১৫৭ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ২৮ জন বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে দুই জনের বছস ৯০ বছরের বেশি। ৮০ বছরের বেশি বয়সী আটজন, ৭০ বছরের বেশি বয়সী ২৭ জন, এছাড়া ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সী ৬৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৪৯, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১২, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২০, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৪ জন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের একজন মারা গেছেন।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। জুলাই মাসে দৈনিক শনাক্তের হার ২৫ শতাংশের উপরে আছে। মোট গড় হার ১৪ শতাংশের উপরে।
গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। সেদিন করোনায় মৃত্যু হয় ২০১ জনের। গতকাল মঙ্গলবার ২০০ জন মারা যান অদৃশ্য ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে। তার আগের দিন সোমবার (১৯ জুলাই) ২৩১ জন মারা যা, যা একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।
এছাড়া ১৮ জুলাই ২২৫ জন, ১৭ জুলাই ২০৪ জন, ১৬ জুলাই ১৮৭ জন, ১৫ জুলাই ২২৬ জন, ১৪ জুলাই ২১০ জন, ১৩ জুলাই ২০৩, ১২ জুলাই ২২০ ও ১১ জুলাই ২৩০ জন মারা যান।