আফগানিস্তানের ১৩ প্রদেশে সেনাবাহিনীর অভিযানে অন্তত ২৬৯ তালেবান সদস্য নিহত হয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে ইরিব নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আফগানিস্তানের লাগমান, নানগারহার, নুরিস্তান, কুনার, গজনি, পাকতিয়া, কান্দাহার, হেরাত, বাল্খ, জুযজান, হেলমান্দ, কুন্দুজ ও কাপিসা প্রদেশে এসব অভিযান চালানো হয়।
এসব অভিযানে আরও ১৭৬ তালেবান সদস্য আহত হয়েছে। এ সময় সেনাবাহিনী তালেবানের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে। তবে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ পরিসংখ্যান প্রত্যাখ্যান করেছে তালেবান।
এদিকে আফগানিস্তানের শতকরা ৯০ ভাগ সীমান্তের ওপর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করার যে দাবি তালেবান করেছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফুয়াদ আমান বলেছেন, আফগান সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার পরিধি ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে এবং হাতছাড়া হয়ে যাওয়া জেলাগুলো তালেবানের কাছ থেকে একের পর এক পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে।
আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশ থেকে পাওয়া আরেক খবরে জানা গেছে, সেখানকার কারাখ জেলায় তালেবানের একটি বড় ধরনের অভিযান প্রতিহত করেছে সেনাবাহিনী। শুক্রবার ওই জেলা তালেবানের হাত থেকে পুনরুদ্ধার করেছে আফগানিস্তানের সরকারি সৈন্যরা।
দু’পক্ষের সংঘর্ষে বহু সাধারণ মানুষও নিহত হয়েছে। এছাড়া ঘর-বাড়ি হারিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। এদিকে আফগানিস্তানে শরণার্থী সংকট মোকাবিলা এবং মার্কিন অনুগত আফগানদের বিশেষ ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যবহারের জন্য ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) ডলার জরুরি তহবিলের অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুক্রবার হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানের বতর্মান প্রেক্ষাপটে শরণার্থী, বাস্তুচ্যুত ও সহিংসতার শিকারসহ যারা নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়াতে এ অর্থ সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।
প্রায় দুই দশকের যুদ্ধের ইতি টেনে সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে সকল মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। ফিরে যাচ্ছে ন্যাটো সেনারাও। আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে সেনা ফেরানোর এই ঘোষণার পর থেকেই আফগান নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে তালেবানের সংঘর্ষ বেড়ে গেছে। প্রায় প্রতিদিনই সেখানে সাধারণ মানুষ নিহতের ঘটনা ঘটছে।