সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে আগামী ২৮ জুলাই সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনের যে তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল ৫ আগস্ট পর্যন্ত তা স্থগিতের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

গতকাল আসনটির সাতজন ভোটার ও সুপ্রিম কোর্টের ছয়জন আইনজীবীর করা এক রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেন।

universel cardiac hospital

আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও বিপুল বাগমার।

উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত ৫ আগস্ট পর্যন্ত নির্বাচনের তারিখ স্থগিত করেছে। আদালত বলেছে, আপাতত ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত। পরে দেখা যাক, কী পরিস্থিতি হয়।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। গত ৩০ নভেম্বরের পর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত সংক্রমণ ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। কিন্তু মার্চের শুরু থেকে দৈনিক শনাক্ত রোগী, মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। বিশেষ করে জুন-জুলাইয়ে করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করে।

মহামারির নতুন ধাক্কা আসার এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়সহ সকল ক্ষেত্রে সব ধরনের জনসমাগম সীমিত করা বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। এর মধ্যে ২৮ জুলাই সিলেট-৩ আসনের ভোট হওয়ার কথা।

করোনার এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে ভোট স্থগিত চেয়ে রিট করেন সিলেটের আসনটির সাতজন ভোটার ও ছয়জন আইনজীবী। রবিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবী ও ওই সাত ভোটার।

নোটিশে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উদ্দেশে বলা হয়েছে, ২৫ জুলাইয়ের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে সিলেট-৩ সংসদীয় আসনে ২৮ জুলাই অনুষ্ঠেয় উপনির্বাচন সংক্রান্তে আপনার বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। আপনি বলেছেন যে, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে চলমান লকডাউনেও নির্বাচন স্থগিত রাখা সম্ভব নয়।

নোটিশে বলা হয়, সংবিধান ১২৩ এর দফা ৪ শর্তানুসারে সিলেট উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত। তাই ২৮ জুলাইয়ে অনুষ্ঠেয় উপনির্বাচন স্থগিত করা যাবে না- এই বক্তব্য আইনের সঠিক ব্যাখ্যা নয়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের উচিত চলমান করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে বিধিনিষেধের সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজন না করা এবং ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অন্য যেকোনো সময় ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করা। ৩ লাখ ৫২ হাজার ভোটারের এই নির্বাচন অনুষ্ঠান সরকারের বর্তমান লকডাউন নীতিরও বিরোধী। সুতরাং ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই। তাই করোনাভাইরাস সংক্রমণের বৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে ২৮ জুলাই অনুষ্ঠেয় সিলেট-৩ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

সোমবার বিষয়টি নিয়ে রিট শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ ৫ আগস্ট পর্যন্ত ভোট স্থগিতের আদেশ দেন।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১১ মার্চ মারা যান সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

শেয়ার করুন