ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ইউলুপ-আন্ডারপাস নির্মাণসহ ১০ প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায়।
প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫৭৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ২ হাজার ১৫০ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে ৪২৫ কোটি টাকা।
বুধবার (২৮ জুলাই) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। অন্যদিকে শেরে বাংলা নগরের মন্ত্রিসভা কমিটি পরিষদ (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩ আন্ডারপাস ও একটি ইউলুপ নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এই আন্ডারপাস ও ইউলুপ নির্মাণ হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট কমে যানবাহনের গতি বাড়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনা কমে যাবে।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক (এন-১) ও কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পদুয়ার বাজার ইন্টারসেকশনে ইউলুপ ও একটি আন্ডারপাস, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা গেট এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেলতলী গেট সংলগ্ন স্থানে ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কে (এন-১) দুটি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রকল্পটির বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৫৬৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুন থেকে ২০২৪ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
অনুমোদন পেয়েছে যে ১০ প্রকল্প-
১. ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কে ৩টি আন্ডারপাস এবং পদুয়ার বাজার ইন্টারসেকশনে ইউলুপ নির্মাণ প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৫৬৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
২. জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (ময়মনসিংহ জোন) প্রথম সংশোধিত প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
৩. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বাংলাদেশ চ্যান্সারি ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে একনেকে। ১৪৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ হাই কমিশন, ক্যানবেরা।
৪. বিজ্ঞান ও প্রযুক্ত মন্ত্রণালয়ের ‘ইনস্টিটিউট অব টিস্যু ব্যাংকিং অ্যান্ড বায়োমেটেরিয়াল রিসার্চ-এর সেবা ও গবেষণা সুবিধাদির আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১৭৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন।
৫. মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘জেলাভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ (৬৪ জেলা)’ তৃতীয় সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। ১১৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকায় জুন ২০২৩ সালে এটি বাস্তবায়ন করবে জাতীয় মহিলা সংস্থা।
৬. স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ শিশু কার্ডিওলজি ও শিশু কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিট স্থাপন’ প্রকল্পটি অনুমোদন পেয়েছে। ৭২ কোটি টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
৭. স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আয়রন ব্রিজ পুনর্নির্মাণ/পুনর্বাসন’ প্রকল্পটি প্রথম সংশোধন হয়েছে একনেকে। দুই হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।
৮. পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘পদ্মা বহুমুখী সেতুর ভাটিতে মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং ও টংগিবাড়ী উপজেলাধীন বিভিন্ন স্থানে পদ্মা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ৪৪৬ কোটি টাকার প্রকল্পটি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) বাস্তবায়ন করবে।
৯. প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ‘প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের পুনঃ একত্রীকরণের লক্ষে অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃজনে সহায়ক’ প্রকল্পটি অনুমোদন পেয়েছে। ৪২৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড।
১০. শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী, ঠাকুরগাঁও’ প্রকল্পটি একনেকের অনুমোদন পেয়েছে। ৯৮ কোটি ৬১ লাখ টাকায় এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)।