সারাদেশে নির্বিঘ্নে নৌচলাচলের স্বার্থে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত শহীদ বুদ্ধিজীবী (বছিলা ব্রিজ) সেতুসহ ৮০৫টি নিচু সেতু ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব সেতু প্রয়োজনীয় উচ্চতায় পুনঃনির্মাণ করা হবে।
আজ বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভার সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। অন্যদিকে শেরেবাংলা নগরের মন্ত্রিসভা কমিটি পরিষদ (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন।
পাঁচ সপ্তাহ পর বুধবার একনেকের বৈঠক বসে। এর আগে ২২ জুন একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
আজকের একনেক বৈঠকে প্রায় দুই হাজার ৫৭৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম জানান, এই ৮০৫টি ব্রিজ ভেঙে নতুন করে এক হাজার ২৪৪টি আরসিসি/পিসি গার্ডার ব্রিজ পুনর্নির্মাণ/পুনর্বাসন করা হবে। নির্বিঘ্নে নৌ চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চতায় পুনর্নির্মাণের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
শামসুল আলম বলেন, মোহাম্মদপুর বছিলা ব্রিজ কিন্তু আমাদের কোনো কাজে আসেনি। বর্তমানে মোহাম্মদপুরের নদী দিয়ে পণ্যবাহী কার্গোগুলো চলাচল করতে পারে না। এজন্য এই ব্রিজটি ভাঙার চিন্তা-ভাবনা চলছে। এছাড়া যেখানে সেখানে বালু না তুলতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, বৈধভাবে ব্যবস্থা করা হলেও যেখানে সেখানে বালু তোলা যাবে না।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এতদিন প্রবাসীরা আমাদের দিয়েছেন, এখন আমরা তাদের দেব। যারা ফিরে এসেছেন তারা যেন সম্মানজনক পেশায় যুক্ত হতে পারেন, কিংবা আরও উন্নত প্রশিক্ষণ নিয়ে আবারও বিদেশে ফিরে যেতে পারেন। এছাড়া মহিলাদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রকল্প না নিয়ে রাজস্ব খাতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলো
একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পসমূহ হলো: সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কে তিনটি আন্ডারপাস ও পদুয়ার বাজার ইন্টারসেকশনে ইউলুপ নির্মাণ প্রকল্প’ এবং ‘জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (ময়মনসিংহ জোন) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বাংলাদেশ চ্যান্সারি ভবন নির্মাণ প্রকল্প’।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘ইনস্টিটিউট অব টিস্যু ব্যাংকিং অ্যান্ড বায়োমেটেরিয়াল রিসার্চ-এর সেবা ও গবেষণা সুবিধাদির আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘জেলাভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ (৬৪ জেলা) (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ শিশু কার্ডিওলজি ও শিশু কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিট স্থাপন’ প্রকল্প।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আয়রণ ব্রিজ পুনর্নির্মাণ/পুনর্বাসন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘পদ্মা বহুমুখী সেতুর ভাটিতে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলাধীন বিভিন্ন স্থানে পদ্মা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্প।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ‘প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণের লক্ষ্যে অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক’ প্রকল্প।
এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী, ঠাকুরগাঁও’ প্রকল্প।
বাংলাদেশ