মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে চাকরি হারিয়ে যেসব প্রবাসী দেশে ফিরেছেন তাদের চাকরি ও ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেজন্য ৪২৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) অনুমোদন পেয়েছে।
আজ বুধবার একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্প অনুযায়ী, করোনায় বিদেশ থেকে ফেরত আসা দুই লাখ প্রবাসী বাংলাদেশিকে প্রতি মাসে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা করে দেবে সরকার। পাশাপাশি তাদের চাকরির ব্যবস্থা করতে দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ।
সাংবাদিকদের কাছে সভার সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রকল্প অনুমোদনের আগে আজকের একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রবাসীরা দেশে অর্থ পাঠান। করোনার কারণে তাদের অনেকে চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। এতদিন তারা আমাদের দিয়েছেন। এবার আমরা তাদের দেব। যারা চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন, তাদের শোভন চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিদেশ ফেরতদের একটি ডেটাবেজ করা হবে এবং তাদের প্রকৃত আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে সহায়তা দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে ফেরত আসা সবাইকে বিভিন্ন সুবিধার আওতায় আনা হবে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে মোট চার লাখ আট হাজার ৪০৮ জন প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে ফিরে এসেছেন। তাদের মধ্য থেকে দুই লাখ কর্মীকে বাছাই করা হবে তাদের আগ্রহ, পারিবারিক অবস্থা, আর্থিক অবস্থা ও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে। কর্মী বাছাইয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। এর বাইরে আরও ২৩ হাজার ৫০০ কর্মীকে বাছাই করে তাদের সরকারের বিভিন্ন সংস্থা থেকে সনদ দেওয়া হবে।
প্রথম দফায় দুই লাখ কর্মীকে ৩২ জেলা থেকে বাছাই করা হবে। অভিবাসী–অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে বিবেচিত জেলাগুলো হলো- চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, রাঙামাটি, কুমিল্লা,ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, ঢাকা, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনা।
আজকের একনেক সভায় প্রায় দুই হাজার ৫৭৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১০টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে সরকারি অর্থায়ন দুই হাজার ১৫০ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ ৪২৫ কোটি টাকা।