কুল্লাপাথর স্মৃতিসৌধের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল করিমের মৃত্যু, মোকতাদির চৌধুরী এমপির শোক

নিজস্ব প্রতিবেদক

আব্দুল করিমে
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম-র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।

না ফেরার দেশে চলে গেলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় অবস্থিত কুল্লাপাথর শহিদ স্মৃতিসৌধের তত্ত্বাবধায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) রাতে কুর্মিটোলা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৭৩ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম। পুত্র ও কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।

universel cardiac hospital

কুল্লাপাথর শহিদ স্মৃতিসৌধের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল করিমের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম ছিলেন দেশের প্রতি একজন নিবেদিত প্রাণ মানুষ। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে কুল্লাপাথর এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে জীবন হারানো শহিদদের মরদেহ সংগ্রহ করে তিনি পৈতৃক ভিটায় দাফন করেন এবং সেখানে সমাধিস্থল তৈরি করেন। পরম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় আজীবন শহিদদের সমাধিস্থল (কুল্লাপাথর শহিদ স্মৃতিসৌধ) তত্ত্বাবধান ও রক্ষণাবেক্ষণ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে কসবা তথা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক মহান ব্যক্তিত্বের শূন্যতা তৈরি হলো। ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী তাঁকে আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ রাখবে। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা মুক্তিযুদ্ধের সময় ২ নম্বর সেক্টরের অধীন ছিল। এই এলাকার পাশেই রয়েছে ভারতের আগরতলা, যেখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য স্থাপন করা হয়েছিল প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। এ কারণে এই অঞ্চলটি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অন্যতম লক্ষ্যে পরিণত হয়। ফলে অন্য অনেক এলাকার তুলনায় এই এলাকায় যুদ্ধ বেশি হয়, যুদ্ধে প্রাণও হারান অনেক মুক্তিযোদ্ধা। ওই সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম উদ্যোগ নিয়ে পৈতৃক ভিটায় আত্মীয়দের সহায়তা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মরদেহ সংগ্রহ করে দাফন করেন। বলা যায়, ব্যক্তি উদ্যোগেই আব্দুল করিম শহিদদের সমাধিসৌধ গড়ে তোলেন এখানে।

পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতায় স্থানটি সংরক্ষণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে এখানে রেস্ট হাউজ ও তোরণ নির্মাণ করা হয়। পুকুরের ঘাটও বাঁধিয়ে দেওয়া হয়। কুল্লাপাথর শহিদ স্মৃতিসৌধ নামে এটি পরিচিত হয়ে ওঠে।

শেয়ার করুন