করোনার চলমান পরিস্থিতিতে আমরা খুব বেশী চাপে আছি- একথা সত্য। কিন্তু এরইমধ্যে ডেঙ্গু যে ঘরে ঢুকে পড়েছে প্রথমে যেন কারো নজরেই আসেনি। অবশ্য সম্প্রতি সিটি করপোরেশনগুলো নড়াচড়া শুরু করেছে; হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর জন্য আলাদা চিকিৎসাব্যবস্থা হয়েছে। তবে যে হারে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে চলেছে, সে কারণে অন্য রোগীদের প্রতি নজর দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে।
চলতি বছর গত ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশে সরকারি হিসেবে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় আড়াই হাজারে। ৩০ জুলাই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৭০৯ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এরমধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৬৭৯ জন এবং অন্যান্য বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন ৩০ জন। সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৭ জন ভর্তি এসএমসি ও মিটফোর্ড হাসপাতালে।
বিশ্বজুড়েই ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ২০১৯ সালে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী গত ৩০ বছরে বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে ৩০ গুণ। ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এই মশা সাধারণত ভোরবেলা ও সন্ধ্যার আগে কামড়ায়। সাধারণ চিকিৎসায়ই ডেঙ্গু সেরে যায়, তবে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম বা হেমোরেজিক ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। বর্ষার সময় সাধারণত এ রোগ বৃদ্ধি পায়।
মশক ও এর লার্ভা নিধনই হচ্ছে ডেঙ্গু রোগের প্রধান চিকিৎসা। এরপর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। এর প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত হচ্ছে দেশের সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো। যে হারে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে চলেছে—সংশ্লিষ্ট সব মহলের এ বিষয়ে মনোযোগ আরো বাড়াতে হবে, নইলে করোনা আর ডেঙ্গু মিলে আমাদের আরো পর্যুদস্ত করে তুলবে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে নাগরিকদের সম্পৃক্ত করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা আইন অমান্য করবে, তাদের জরিমানা করার পাশাপাশি জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে সম্পৃক্ত করতে হবে।