আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে আরও ৫৪ লাখ করোনাভাইরাসের টিকা আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার (০৯ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৫ তারিখের মধ্যে কোভ্যাক্স থেকে আরও ৩৪ লাখ টিকা পৌঁছাবে এবং চায়না থেকে ক্রয়কৃত ১০ লাখ টিকা পৌঁছাবে, তারা আরও ১০ লাখ টিকা আমাদের উপহার হিসেবে দেবে। সবমিলে ৫৪ লাখ টিকা আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে আমরা পেয়ে যাবো। এতো আমাদের টিকার কার্যক্রমটি যে গতিতে চলছিলে, সেটি অব্যাহত রাখতে পারব।
তিনি বলেন, আজ কেবিনেট মিটিংয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষার বিষয়ে কিছু আলোচনা ছিল। আরও বেশ কিছু বিষয়ে আজ আলোচনা হয়েছে। তবে টিকার বিষয়ে আজকের বৈঠকে কোন আলোচনা ছিলে না। ভ্যাকসিনের বিষয়ে আমরা একটা সফল কার্যক্রম শুরু করেছি। সেটা গত পরশুদিন থেকে শুরু হয়েছে। সেদিনই গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশে মানুষ টিকা নিয়েছে। যেভাবে নির্বাচনের সময় মানুষ আসে, লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে। প্রতিটা ইউনিয়নে ৬০০ করে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা ছিলে, কিন্তু আমরা দেখলাম তার চেয়ে বেশি মানুষ হাজির।
‘আমাদের যেসব সেন্টারে টিকা বেশি ছিল তারা বেশি দিয়েও দিয়েছে। যারা ভ্যাকসিন পায়নি ঝড় বৃষ্টির কারণে, তাদের পরেরদিন দেয়া হয়েছে। দুর্গম এলাকায়ও দেয়া হয়েছে। একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় গ্রামে যেখানে টিকা প্রাপ্তির সংখ্যা কম ছিল। বয়স্করা কম পেয়েছিল, অনেকের অনীহা ছিল। সেই অনীহা কেটে গেছে। টিকার প্রতি তাদের আগ্রহ অনেক বেড়েছে। পৌরসভায় যেসব টিকা দেয়া হচ্ছে, সেটি চলমান থাকবে। নরমাল ভ্যাকসিনের কার্যক্রমও চলমান থাকবে। আমাদের রুটিন ভ্যাকসিনেশন চালু থাকবে। গত দু-তিনদিনে কোন ঘটনা সেভাবে সামনে আসেনি। সব জায়গায়ই ভালোভাবে হয়েছে। এ পর্যন্ত গণটিকা কার্যক্রমের আওতায় ৩০ লাখের বেশি টিকা দেয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আরও ৬ কোটি ভ্যাকসিন কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে, চীন থেকে কেনার জন্য। ক্রয় কমিটিতেও পাস হবে। এর মধ্যে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ৩৪, চীন থেকে কেনা ১০ ও উপহার ১০ লাখ টিকা। এছাড়াও ভারতের বাকি টিকাও পাবো বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, ‘যেগুলো আমরা ক্রয় করেছি, চীন থেকে আমাদের জানানো হয়েছে আরও তারা ৫ মিলিয়ন অর্থ্যাৎ ৫০ লাখ ভ্যাকসিন তারা আমাদেরকে দেবে। কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকেও আমরা পেতে পারি, যার সংখ্যা এখনও আমাদের জানানো হয় নি।‘
তিনি আরও বলেন, ‘কোভ্যাক্স থেকে আমরা পাই, কিন্তু সংখ্যায় একসঙ্গে অনেক বেশি পাই না। সে কারণে আমরা প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে, উনার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে চায়নার সঙ্গে আলোচনা করে, আমরা আরও ৬ কোটি টিকার অনুমোদন সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। চায়না থেকেও সেই অনুমোদন তারা দিয়েছে। এখন আমরা চুক্তির পর্যায়ে আছি। অর্থনৈতিক কমিটিতে গিয়ে সেটা পাশ হয়ে যাবে। সেই টিকা আসলে আমাদের জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখবে। টিকা কার্যক্রম জোরদার হবে।’
সেই টিকা কীভাবে পাওয়া যাবে, তার ব্যাখ্যায় জাহিদ মালেক বলেন, ‘সেই টিকা তারা দেবে বলেছে, আমাদের এ মাসে যতটা সম্ভব। আর সেপ্টেম্বরের কথাও বলেছে চায়না যে আমাদের ১০ থেকে ১৫ মিলিয়ন ভ্যাকসিন তারা দেবে। আর অক্টোবরে দেবে ২০ মিলিয়ন। আর নভেম্বরে ২০ মিলিয়ন। এ পর্যন্ত আমরা তাদের কাছে তথ্য পেয়েছি। পাশাপাশি কোভ্যাক্সের টিকা আসবে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফাইবারের টিকা পাওয়ার কথা ৬ মিলিয়ন। সেটাও আমরা পাবো।’
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার অবশিষ্ট ২ কোটি ৩০ লাখ টিকা পাওয়ার আশাও করছে সরকার। তবে এখনও কোনো নিশ্চিত ডেট দেয়নি, কবে তারা দেবে। আশা করি, এখন সময় আসছে দেয়ার।