নোয়াখালীর সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ মোল্লাকে (৫০) গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় এক হামলাকারীসহ আরও দুইজন আহত হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তালতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত হারুনুর রশিদ মোল্লা উপজেলার পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের নছিবুল হকের ছেলে। আহতরা হলেন-নিহত হারুন অর রশিদের ভাতিজা রমিজ উদ্দিন (২৫) ও হামলাকারী গিয়াস উদ্দিন (৩০)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর ছকিদারহাট মসজিদের সামনে বিএনপি নেতা হারুন মোল্লার ভাই আমিনুল হকের সাথে স্থানীয় হোরন মেম্বারের ছেলে রিয়াদ, রিপন এবং স্থানীয় সাহাব উদ্দিন নামের একজনের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রিয়াদ ও রিপনের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ছকিদারহাটে এসে সজিবকে খুঁজতে থাকে। পরে তারা বাজারে সজিবকে না পেয়ে তাদের বাড়ির দিকে যায়। পথে হারুন মোল্লাকে পেয়ে প্রথমে গুলি ও পরে কুপিয়ে হত্যা করে।
নিহত হারুন মোল্লার ভাতিজা জামাল উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে হারুন মোল্লার ভাই আমিনুল হকের বাড়ির ওপর দিয়ে হাঁটাহাঁটি করে সাহাব উদ্দিন নামের একজন। বিষয়টি বুঝতে পেরে আমিনুল হক সাহাব উদ্দিনকে দাঁড় করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার জুমার নামাজের পর ছকিদারহাট সামছুল হক ভূইয়া মসজিদে আমিনুল হক ও তার ভাতিজা সজিবের (হারুন মোল্লার ছেলের) সাথে সাহাব উদ্দিন, রিয়াদ, রিপন, নাছির, ফরহাদ ও রহমানসহ কয়েকজনের পুনরায় কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার জেরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ছকিদারহাট ও তার আশপাশের এলাকায় হারুন মোল্লার ছেলে সজিবের ওপর হামলার জন্য ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে অবস্থান করে সাহাব উদ্দিন, রিয়াদ ও রিপন। বিষয়টি জানতে পেরে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল যোগে ছকিদারহাটের দিকে আসছিলেন হারুন মোল্লা, আমিনুল হক ও রমিজ।
পথে তালতলা এলাকায় তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ওই সন্ত্রাসীরা। প্রথমে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়লে গুলিবিদ্ধ হয়ে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান হারুন মোল্লা। এসময় আমিনুল হক পাশ্ববর্তী একটি ক্ষেত দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যেতে পারলেও আটকা পড়েন হারুন ও রমিজ। সন্ত্রাসীদের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে ছকিদারহাট বাজারে আসেন রমিজ।
পরে সজিবসহ বাজারের লোকজন তালতলা এলাকায় গিয়ে সড়কের পাশের একটি ক্ষেতের পানির নিচ থেকে হারুন মোল্লার নাড়ি-ভুঁড়ি বের হওয়া লাশ উদ্ধার করেন।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহেদ উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো.শহীদুল ইসলাম জানান, নোয়াখালীর সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ মোল্লাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সোহাগ ও মিলন নামের দুইজনকে পুলিশ আটক করেছে।