শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নির্ভর করছে সংক্রমণ কমার ওপর: দীপু মনি

ডেস্ক রিপোর্ট

দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। ফাইল ছবি

কয়েক দিন আগে সেপ্টেম্বরের কথা বললেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে নতুন বক্তব্য দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বললেন, করোনার সংক্রমণ কমে এলে এবং টিকাদান শেষ হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।

শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাপে ধাপে শ্রেণিকক্ষে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে সংক্রমণ কমার ওপর।

universel cardiac hospital

রোববার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন মহামারির যে পরিস্থিতি তাতে কবে নাগাদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে সেটি বলার সুযোগ নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেকোনো সময় খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি থাকলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসা এবং শিক্ষার্থীদের টিকাদানের ওপর সবকিছু নির্ভর করছে।’

তবে সংক্রমণের হার একেবারেই কমে গেলে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একসঙ্গে খুলে দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

দীপু মনি বলেন, ‘বিশেষজ্ঞরা বলেন শনাক্তের হার শতকরা ৫ শতাংশের কম হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়। আমরা এটি মাথায় রাখছি। এখন যেহেতু ব্যাপকহারে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে, সেক্ষেত্রে ৫ শতাংশ না হলেও সংক্রমণ যথেষ্ট পরিমাণ নিচে নামলে হয়ত শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে নিয়ে আসতে পারব।’

দেশে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ার পর থেকে গত বছরের মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এরপর একাধিকবার প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেওয়া হলেও করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় দফায় দফায় বাড়ানো হয় ছুটি।

লকডাউন শেষে ১১ আগস্ট থেকে সব কিছু চালু হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে আগেই জানিয়েছে সরকার।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, ১৮ বছরের ঊর্ধ্বের শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের টিকা দেওয়ার কাজও প্রায় শেষ। আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকাংশও টিকা পেয়েছেন। এখন দুইটা বিষয়- সংক্রমণের হার কমে যাওয়া আর সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা। এ দুটো যখন হবে, তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে ভাবা যাবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব কিছু খুলে দেওয়ায় অনেকে সমালোচনা করার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের। এখন সেটি নির্ভর করছে অবস্থা কখন কী রকম দাঁড়ায় তার ওপর।

শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে আনার পরিকল্পনার বিষয়েও কথা বলেন দীপু মনি। মন্ত্রী বলেন, সংক্রমণের হার একেবারেই কমে চলে আসলে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একসঙ্গে খুলে দেওয়া হবে। যদি ধীরে ধীরে কমে সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা যেহেতু আগে টিকা পাবে, তাই বিশ্ববিদ্যালয় আগে খুলে দেয়া হবে। খোলার পর বিশেষ করে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের একেবারে পাঁচ-ছয়দিন নিয়ে আসব তা না, ধাপে ধাপে নিয়ে আসা হবে। কারণ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের এখানে বেশি। সংক্রমণ কমলেও আমাদের বহুদিন মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সেসব বিবেচনা করেই আমরা পরিকল্পনা করছি।

সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থী আছে প্রায় ৪০ লাখ। এখন টিকা দেওয়ার ব্যাপক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আমরা সেই অর্থে খুবই কম দিতে পেরেছি। এটা কত সময় লাগতে পারে তা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। কারণ শিক্ষার্থীদের বাইরেও আরও অগ্রাধিকার গ্রুপ রয়েছে। তবে সারা দেশে যেভাবে মানুষ আগ্রহী হচ্ছে, তাতে আশা করি দ্রুতই সবাইকে টিকার আওতায় আনা যাবে।’

শেয়ার করুন