তালেবানের দাপটে ক্ষমতা হারিয়েছেন আগেই। নিজে বাঁচতে গোপনে দেশ ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে। তাতেও যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না আশরাফ গনি। দেশের সম্পদ চুরির অভিযোগে এবার তাকে আটক করতে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ইন্টারপোল’-কে অনুরোধ জানিয়েছে তাজিকিস্তানের আফগান দূতাবাস।
বুধবার (১৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। আশরাফ গনির পাশাপাশি আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামদাল্লাহ মোহিব এবং গনির সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ফজল মাহমুদ ফাজলিকেও গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে। বুধবার এই দাবি জানায় প্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানের আফগান দূতাবাস।
এদিকে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি রোববার বিকেলে কাবুল থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাথে প্রায় ১৭ কোটি মার্কিন ডলার নিয়ে যান বলে বুধবার অভিযোগ করেন তাজিকিস্তানে নিযুক্ত আফগান রাষ্ট্রদূত মোহম্মদ জহির আগবার।
আফগান এই রাষ্ট্রদূতের অভিযোগ, গনি রোববার যখন দেশ ছাড়েন তখন তার সাথে করে তিনি ১৬ কোটি ৯০ লক্ষ ডলার নিয়ে যান। গনির আফগানিস্তান ত্যাগকে ‘দেশ ও জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা’ বলেও বর্ণনা করেন তিনি।
এর আগে রোববার পালানোর সময় গনি চারটি গাড়ি ও হেলিকপ্টারে করে বিপুল পরিমাণ অর্থও নিয়ে গেছেন বলে সোমবার জানিয়েছিল কাবুলে অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাস। দূতাবাসের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা আরআইএ এই তথ্য জানায়।
কাবুলে রাশিয়া দূতাবাসের মুখপাত্র নিকিতা ইশচেঙ্কো আরআইএ’কে বলেন, ‘বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তি ছিল চারটি গাড়ি, তাছাড়া একটি হেলিকপ্টারেও অর্থের একটি অংশ তোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জায়গা না হওয়ায় অনেক অর্থ টারমার্কে ফেলে যায়।’
উল্লেখ্য, গত রোববার তালেবান যখন কাবুলের প্রবেশ পথগুলোতে পৌঁছে যায় তখন আশরাফ গনি নগরীর বিমানবন্দর ব্যবহার করে দেশ থেকে পালিয়ে যান। অনেক জল্পনা শেষে বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাত জানায়, মানবিক কারণে গনি ও তার পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
প্রথম শোনা যায় তিনি তাজিকিস্তানে গেছেন। পরে জানা যায় উজবেকিস্তানে। এর পর দিন খবর আসে তাজিকিস্তান কিংবা উজবেকিস্তান নয় গনি চলে গেছেন ওমানে। তবে ওমান কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত না করায় গনি কোথায় গেছেন তা নিয়ে ধোয়াঁশা তৈরি হয়। পরে ক্ষমতাচ্যুত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বর্তমানে আবু ধাবিতে রয়েছেন বলে বুধবার নিশ্চিত করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।