পঞ্জশিরে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে তালেবানবিরোধীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

পঞ্জশির
পঞ্জশির প্রদেশ। ফাইল ছবি

তালেবানবিরোধীদের দুর্গ হবে আফগানিস্তানের পঞ্জশির প্রদেশ এবং এর নেতৃত্বে থাকবেন দেশটির স্বঘোষিত ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ। বুধবার তাজিকিস্তানে নিযুক্ত আফগান রাষ্ট্রদূত জহির আগবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন।

গত মঙ্গলবার আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট সালেহ ঘোষণা দিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি পালিয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তিনিই বর্তমানে আফগানিস্তানের বৈধ ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট। এর আগে, গানির মতো সালেহও দেশত্যাগ করেছেন বলে খবর ছড়িয়েছিল, তবে এক টুইটে আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট নিশ্চিত করেছেন, তিনি এখনও আফগানিস্তানেই রয়েছেন। অবশ্য তার অবস্থান এখনও অজ্ঞাত।

universel cardiac hospital

গানি সরকারের আমলে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ছিল জহির আগবরের। রাষ্ট্রদূত হওয়ার আগে দেশটির পুলিশপ্রধানের দায়িত্বও সামলেছেন। এখন তালেবানের হাতে ক্ষমতা ‘সঁপে দেওয়ায়’ প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানির সমালোচনায় মেতেছেন তার একসময়ের ঘনিষ্ঠ এ সহকর্মী।

জহির বলেন, আমি বলব না তালেবান যুদ্ধে জিতেছে। না, কেবল আশরাফ গানি তালেবানের সঙ্গে ‘প্রতারণামূলক’ আলোচনার পর ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন।

আমরুল্লাহ সালেহ
আমরুল্লাহ সালেহ । ফাইল ছবি

এ কারণে গানির জায়গায় সালেহকে বসিয়ে তালেবানের হাত থেকে ফের দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার আশা করছেন এ রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, পঞ্জশির প্রতিরোধ গড়বে, আর তার নেতৃত্ব থাকবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ। যারা মানুষকে দাস বানাতে চায় তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে পঞ্জশির।

সরু পঞ্জশির উপত্যকায় আজও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আশির দশকে মুজাহিদীন নেতা আহমদ শাহ মাসউদের বাহিনীর হাতে ধ্বংস হওয়া সোভিয়েত যুদ্ধযানগুলো। এলাকাটি একসময় তালেবানবিরোধীদের অন্যতম ঘাঁটি হয়ে ওঠে। ২০০১ সালে তালেবান সরকারকে হটাতে পঞ্জশির-ভিত্তিক জোটগুলোর সাহায্য নিয়েছিল মার্কিনিরাও।

মাসউদের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী বর্তমান আফগান প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ। অবশ্য তার নেতৃত্বে পঞ্জশির কতটা প্রতিরোধ গড়তে পারবে, নাকি এটি তালেবানের সঙ্গে সমঝোতার কোনও প্রস্তাবনা, তা নিশ্চিত নয়। তবে তালেবান যোদ্ধারা এখনও এ অঞ্চলে প্রবেশ করেনি।

ধারণা করা হয়, মাসউদের ছেলে আহমদ মাসউদও এখন সদলবলে পঞ্জশিরে রয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

অনিশ্চিত কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, আফগানিস্তানের এলিট স্পেশাল ফোর্সের কিছু সদস্য তালেবান কাবুল দখলের পর পঞ্জশিরে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা অতীতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সামরিক প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন।

রয়টার্সের খবরে আরও বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে সত্যিই যদি এ ধরনের প্রতিরোধ সৃষ্টি হয়, তাহলে তালেবান প্রস্তাবিত সব জাতি-ধর্মের ঐক্যবদ্ধ সরকার গঠনে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তবে রাষ্ট্রদূত জহির আগবর বলেছেন, তালেবানের সঙ্গে জোট সরকার সম্ভব, যদি তা সব আফগান গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে ও তারা (তালেবান) অন্যদের শান্তি ও সমঝোতায় থাকতে দেয়।

শেয়ার করুন