বরিশালের ঘটনাকে পুঁজি করে কাউকে পানি ঘোলা করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, তদন্তে সত্য উদঘাটিত হবার আগে এ নিয়ে অতিমাত্রায় কথা বলা বা কিছু করাও সমীচীন হবে না।
শুক্রবার (২০ আগস্ট) বিকালে শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অ্যাকাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
বরিশাল সদরের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসায় বুধবার রাতে হামলার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, বরিশালের ঘটনাটি অনভিপ্রেত ও অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের দলের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। আমাদের দলের কথা বলে বা দলেরই কেউ কোনও অপকর্মে লিপ্ত হলে, আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সব সময়ই সে বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছেন।
বরিশালের ঘটনাটি এখনও তদন্তাধীন, দুটি মামলা হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ৬০ জন গুলিবিদ্ধ ও অনেকের আহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেটিও দেখা হচ্ছে। তদন্তাধীন বিষয়ে বেশি কথা বলতে চাই না, তদন্তের ভিত্তিতে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, প্রশাসন ক্যাডার ইতোমধ্যে এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে এবং সেখানে বরিশালের মেয়র ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন বলা হয়েছে। তদন্তাধীন বিষয়ে এমন বিবৃতি দেওয়া যৌক্তিক কিনা, বা তারা এটা করতে পারে কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেখেছি, প্রশাসন ক্যাডারের পক্ষ থেকে তড়িঘড়ি করে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। তদন্তে বেরিয়ে আসবে আসলে কী ঘটনা ঘটেছে। একইসঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অভিযোগের বিষয়ও তদন্তে বেরিয়ে আসবে। তবে এ ঘটনাকে পুঁজি করে কাউকে পানি ঘোলা করতে দেওয়া হবে না। আমি মনে করি, তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটিত হওয়ার আগে এ নিয়ে কারও অতিমাত্রায় কথা বলা বা কিছু করা সমীচীন হবে না।
এর আগে সভায় ড. হাছান মাহমুদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, আগস্ট মাস বাঙালির শোকের মাস। এই আগস্টেই আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু মুজিবকে হারিয়েছি, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকেও এ মাসেই হারিয়েছি।
বঙ্গবন্ধু যেভাবে মানুষকে উদ্দীপ্ত করেছিলেন, তাতে মানুষের সবচেয়ে প্রিয় যে নিজের প্রাণ, তা হাতের মুঠোয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য ছিনিয়ে এনেছে বাঙালিরা, এজন্যই বঙ্গবন্ধু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বলেন আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সম্পাদক।
ঢাকা উত্তরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ মোহাম্মদ ফোরকান হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি প্রমুখ তাদের বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম ও ১৫ আগস্টের ওপর আলোকপাত করেন। সভা শেষে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন অতিথিরা।