প্রসঙ্গ : ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ১৭ বছর

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

পনেরো আগস্ট ও একুশে আগস্টের হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা
ফাইল ছবি

বহুল আলোচিত ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ১৭ বছর পূর্ণ হলো আজ (২১ আগস্ট, ২০২১)। ২০০৪ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে চালানো ওই হামলায় অল্পের জন্য রক্ষা পান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নিহত হন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের স্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভি রহমানসহ দলের ২৪ নেতাকর্মী। আহত হন কয়েকশ।

মূলত তখনকার প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাই ছিলেন গ্রেনেড হামলা পরিকল্পনাকারীদের টার্গেট। পৃথিবীতে এমন কলঙ্কজনক ঘটনার নজির নেই বলেই আমাদের ধারণা। দুঃখজনক হলেও সত্য, তদান্তিন প্রধানমন্ত্রী খুনি খালেদা তৃতীয় দিন পর্যন্ত আমাদের আহত নেত্রীকে দেখতে যায়নি। তারা আজ পর্যন্ত ঐ হামলার নিন্দা জানায়নি। আমি তাদের ধিক্কার জানাই। তারা গ্রেনেড হামলার বিচার ভিন্ন দিকে নেওয়ার জন্য জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে ছিল।

universel cardiac hospital

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দ্বিতীয় দফার তদন্তে বেরিয়ে আসে, তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ইন্ধনে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজি)সহ তিনটি জঙ্গি সংগঠন ওই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। মামলার তদন্তে আরও প্রমাণ হয়েছে তারেক জিয়ার নির্দেশে ঐ হামলা চালানো হয়েছিল।

ভয়াবহ সেই ঘটনার ১৪ বছর পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এ মামলার রায় ঘোষিত হয়। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকি ১১ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। মামলাটি এখন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ন্যায়বিচারের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদেরও সজাগ হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা ছাড়াও দলের ভেতর থেকে প্রতিহিংসার উপাদান দূর করতে হবে। গণতন্ত্রের স্বার্থেই রাজনীতি থেকে দূর করতে হবে অপশক্তি ও অপচিন্তা।

লেখক : সংসদ সদস্য,
যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, পঁচাত্তর-পরবর্তী প্রতিরোধ যোদ্ধা,
সম্পাদক, মত ও পথ।

শেয়ার করুন