বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি কেন ঘটেছে, সরকার তা বোঝার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, সমস্যা সমাধানে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই সরকার সবকিছু দেখছে।
রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমকে একথা বলেন।
গত ১৮ আগস্ট রাতে নগরের সিঅ্যান্ডবি সড়কে উপজেলা পরিষদ কম্পাউন্ডে শোক দিবসের ব্যানার অপসারণ কেন্দ্র করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে রাতভর সংঘর্ষ হয়। এসময় ইউএনওর সরকারি বাসভবনেও হামলার অভিযোগ ওঠে।
ইউএনও মুনিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শোক দিবস উপলক্ষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুকের ব্যানার ও পোস্টার লাগানো ছিল। রাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসব ছিঁড়তে আসেন। রাতে লোকজন ঘুমাচ্ছে জানিয়ে তাদের সকালে আসতে বলা হয়। এ কারণে তারা গালিগালাজ করেন। আমার বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালায়।
পরদিন বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) ইউএনও মুনিবুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। ইউএনওর মামলায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে হুকুমের আসামি করা হয়।
এছাড়া মামলায় ৩০-৪০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকশ জনকে আসামি করা হয়।
এদিকে সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই শাহজালাল মল্লিক বাদী হয়ে আলাদা অন্য একটি মামলা করেন। দুটি মামলায় মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়।
১৯ আগস্ট রাতেই এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানায় প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। এর আগে সন্ধ্যায় সংগঠনের সভাপতি ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ারের সভাপতিত্বে সংগঠনের কার্যনির্বাহী পরিষদের জরুরি সভা হয়।
পরে রাতে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সংগঠনটি বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানায়। অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দেয়।
এসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি কী হয়েছে, সেখানে কেন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটলো, সব বিষয়ই আমরা দেখছি। আমরা বিষয়টি গভীরভাবে দেখছি, আসলে ব্যাপারটা কী হয়েছিল? আমরা বোঝার চেষ্টা করছি, সমস্যা সমাধানে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই সরকার সবকিছু দেখছে।
‘এ ঘটনার সঙ্গে রয়েছেন জনপ্রতিনিধি, তিনি সরকারের এক্সিকিউটিভ বডির সদস্য। সরকারের কর্মচারীরাও এক্সিকিউটিভ বডির সদস্য।’
ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, সরকারের তিনটি বিভাগ- বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগ। মেয়রও নির্বাহী বিভাগের সদস্য। কারণ তিনি সরকারের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছেন। সংসদ সদস্যরা আইন বিভাগের সদস্য। সবাইকে এখতিয়ারের মধ্য থেকে তাদের আচরণ করতে হবে। তাদের যে কাজের গণ্ডি সংবিধানে দেওয়া, দায়িত্বের মধ্য থেকেই সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।