আফগানিস্তানের নতুন অর্থমন্ত্রী, অন্তবর্তী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং গোয়েন্দা প্রধান নিয়োগ দিয়েছে তালেবান। আফগানিস্তানের বার্তা সংস্থা পাজহোকের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দেশটির নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে গুল আগা, অন্তবর্তী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সদর ইব্রাহিম এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে নাজিবুল্লাহকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মুল্লাহ শিরিন রাজধানী কাবুলের গভর্নর এবং হামদুল্লাহ নোমানি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এর আগে আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নিয়োগ দিয়েছে তালেবান। সংগঠনের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ পাকিস্তানভিত্তিক আফগান ইসলামিক প্রেসকে (এআইপি) জানিয়েছেন, দ্য আফগানিস্তান ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসেবে হাজি মোহাম্মদ ইদ্রিসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এক ঘোষণায় জানান যে, খুব শিগগিরই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হবে। আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পর দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাড়ে নয়শ কোটি ডলারের সম্পদ জব্দ করে যুক্তরাষ্ট্র। তারপর থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
সে সময় মার্কিন প্রশাসনের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্লুমবার্গ জানায়, মার্কিন রাজস্ব দপ্তরের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় এখনও নাম রয়েছে তালেবানের। এ কারণে তারা আফগানিস্তানে সরকার গঠন করলেও যুক্তরাষ্ট্রে থাকা আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনও সম্পদ বা সম্পত্তির নাগাল পাবে না।
তালেবানের এক শীর্ষ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, নতুন গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ইদ্রিস উত্তরাঞ্চলীয় জাওযান প্রদেশের। আর্থিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান তালেবানের শাসনে ছিল। এর মধ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদার নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট সেখানে যৌথ অভিযান চালায়, যার মাধ্যমে তালেবান শাসনের অবসান ঘটে।
অভিযানে আল-কায়েদার শীর্ষ নেতাদের দমন করা হলেও ‘শান্তিরক্ষার স্বার্থে’ সেখানে ঘাঁটি গেড়ে অবস্থান করছিল পশ্চিমা সেনারা। কিছু বছর পার হওয়ার পর সেখান থেকে ধাপে ধাপে যুক্তরাষ্ট্র বাদে অন্য দেশের সেনাদের ফিরিয়ে নেয়া হয়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রও তাদের সেনাদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করলে প্রত্যন্ত এলাকা দখল করে থাকা তালেবান কাবুলের ক্ষমতার মসনদে উঠতে জোর লড়াইয়ে নামে। যদিও এর মধ্যে তালেবানের সঙ্গে কাবুলের শাসকগোষ্ঠীর সংঘাতের অবসানে কাতারসহ বিভিন্ন পক্ষের মধ্যস্থতায় নানা সময়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সব আলোচনাই ভেস্তে গেছে।