অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় মোবাইলে কথা বলেছেন টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে এক এসটিআইসহ চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ আগস্ট) সকালে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. হাসানুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, এসটিআই শাহাব উদ্দিনসহ চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্যোগ চলছে। আদালতে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।
ভাইরাল ছবিতে দেখা যায়, আদালতের কাঠগড়ায় বসে মোবাইলে কথা বলছেন কক্সবাজারের টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি ও আলোচিত সিনহা হত্যা মামলার দ্বিতীয় আসামি প্রদীপ কুমার দাশ।
ছড়িয়ে পড়া ছবিটির বিষয়ে আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, মোবাইলে কথা বলার ছবিটি মঙ্গলবারের নয়। এদিন আসামি প্রদীপের গায়ে গেঞ্জির কালার ছিল রঙিন। ছবিটি সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথম দিনের (সোমবারের) হতে পারে। এদিন তার গায়ের জামার কালার ছিল এটি। কে বা কারা এই ছবি তুলেছেন, তা–ও অজানা।
সোমবার (২৩ আগস্ট) কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সিনহা হত্যা মামলার বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণ চলছিল। এ সময় কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন প্রদীপসহ মামলার ১৫ জন আসামি। প্রদীপের পরনে ছিল কালো রঙের জামা। ছড়িয়ে পড়া ছবির ব্যক্তিকে কালো রঙের জামা পরে থাকতে দেখা যায়। আর মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সাক্ষ্য গ্রহণের দ্বিতীয় দিন প্রদীপ আদালতে আসেন লাল রঙের জামা পরে।
প্রথমদিন সাক্ষ্য গ্রহণের কোনো এক ফাঁকে আদালতের কাঠগড়ায় বসে প্রদীপ মোবাইলে কথা বলেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছবিতে দেখা যায়, আদালত কক্ষের কাঠগড়ার ভেতরে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন প্রদীপ। হাতে থাকা মোবাইলে কারও সঙ্গে তিনি কথা বলছিলেন। তার মাথায় চুল নেই। ফলে ছবিটি যে প্রদীপের, তা স্পষ্টভাবে শনাক্ত করা যায়। ঘটনার সময় কয়েকজন ব্যক্তি তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ওসি প্রদীপ মোবাইলে লম্বা সময় কথা বলেন। সম্ভবত তিনি বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কথা বলার জন্য মোবাইলটি ওসি প্রদীপকে সরবরাহ করেন দায়িত্বরত একজন পুলিশ সদস্য।
এদিকে, বুধবার (২৫ আগস্ট) সাক্ষ্যগ্রহণের তৃতীয় দিনে নিহত সিনহার সফরসঙ্গী সিফাতের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। বেলা সাড়ে ১০টায় শহিদুল ইসলাম সিফাতের গতকালের অসমাপ্ত জবানবন্দি নেয়া শুরু হয়। তাকে জেরা করছেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। তার সাক্ষ্য শেষ হলে বাকিদের জবানবন্দি নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি ফরিদুল আলম।