কোনো ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ ও সম্পত্তি ক্রোকের ক্ষমতা দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের নেই বলে রায় ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। আজ বুধবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বলা হয়, সম্পত্তি ক্রোক বা ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে সিনিয়র স্পেশাল জজ বা বিচারিক আদালতে আবেদন করতে হবে। পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত সন্তুষ্ট হয়ে আদেশ দিলে তখন ব্যাংক হিসাব জব্দ বা সম্পত্তি ক্রোক করার সুযোগ রয়েছে। এমনকি সেই সম্পত্তি অপরাধলব্ধ হলেও দুদকের এই ক্ষমতা নেই বলে জানান উচ্চ আদালত।
চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি দুদকের চট্টগ্রাম-২ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন কক্সবাজারের বাসিন্দা ব্যবসায়ী বেলায়েত হোসেনের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের কক্সবাজার শাখার ম্যানেজারকে নির্দেশ দেন। সে নির্দেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন বেলায়েত হোসেন। সেই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে এই রায় দিলেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, দুদকের কোনো তদন্ত কর্মকর্তা কারও ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিতে পারেন না। কমিশনের অনুমোদনসাপেক্ষে আদালতের আদেশে ব্যাংক হিসাব জব্দ করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু কক্সবাজারে বেলায়েত হোসেন নামে এক ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের নির্দেশ দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তা অবৈধ ঘোষণা করা হলো।
হাইকোর্ট বলেন, দুদকের আইন ও বিধিতে কোনো অনুসন্ধান বা তদন্ত কর্মকর্তা এমনকি অন্য কোনো কর্মকর্তাকে এ ধরনের অপরাধলব্ধ সম্পত্তি ক্রোকের ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। ফলে এই মামলায় দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ব্যাংক হিসাব জব্দে যে চিঠি দিয়েছেন তা শুধু উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, এখতিয়ারবহির্ভূত ও বেআইনিই নয়, ক্ষমতার অপব্যবহারও বটে।