কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে দে‌শে ফেরার অপেক্ষায় ১৫ বাংলাদেশি

মত ও পথ ডেস্ক

কাবুল বিমানবন্দর
কাবুল বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

অপেক্ষার প্রহর যেন ফুরায় না। কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বি‌শেষ ফ্লাই‌টে দে‌শে ফেরার জন্য ‌রয়েছেন ১৫ বাংলা‌দেশি। তা‌দের স‌ঙ্গে ২০ ঘণ্টা ধ‌রে নিরাপদ প্যা‌সে‌জের জন্য ব‌সে আছেন ১৬০ আফগান ছাত্রী। আফগান ছাত্রীরা চট্টগ্রা‌মে অব‌স্থিত এশিয়ান ইউ‌নিভা‌র্সি‌টি ফর উই‌মে‌নের শিক্ষার্থী। দেড় বছর আগে কো‌ভিড-১৯ মহামা‌রির কার‌ণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হ‌লে এসব মে‌য়েরা নিজ দে‌শে যান। এখন বাংলা‌দে‌শে বিশ্ববিদ্যালয়‌ খোলার প্রস্তু‌তি শুরু হওয়ায় তারা চট্টগ্রা‌মে ফিরে আসতে বিপা‌কে প‌ড়ে‌ছেন।

কাবুলে তা‌লেবা‌ন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর বি‌ভিন্ন দেশ নিজ নিজ নাগ‌রিক‌দের ফি‌রি‌য়ে নি‌চ্ছে। বি‌শেষ ক‌রে মা‌র্কিন সৈন্য, দূতাবাস ক‌র্মী, মা‌র্কিন বা‌হিনী‌তে কর্মরত অনুবাদকসহ অপরাপর ক‌র্মী ও তা‌দের প‌রিবার পরিজনকে আফগা‌নিস্তা‌নের বাইরে নি‌য়ে আসার জন্য কাবুল বিমানবন্দ‌রে নিরাপত্তা দি‌তে ৬০০০ হাজার মা‌র্কিন সেনা, ১০০০ ব্রি‌টিশ সেনা এবং ন্যা‌টো সৈন্যরা মোতা‌য়েন আছেন। আফগা‌নিস্তান থে‌কে স‌রি‌য়ে নেওয়ার এসব কার্যক্রম ৩১ আগ‌স্টের ম‌ধ্যে শেষ করার জন্য সময়সীমা দি‌য়ে‌ছে তা‌লেবান ।

universel cardiac hospital

আফগান ছাত্রী‌দের বাংলা‌দে‌শে আনার জন্য জা‌তিসংঘ উদ্বাস্তু সংস্থা ইউএনএইচ‌সিআর এক‌টি সুপ‌রিসর এয়ারক্রাফট ভাড়া ক‌রে‌ছে। মা‌র্কিন বা‌হিনী ও তা‌লেবা‌নের অনুম‌তি পে‌লে তা‌দের‌কে নি‌য়ে বিমান‌টি বাংলা‌দে‌শে আস‌বে। বিমান‌টি‌তে কিছু আসন খা‌লি থাকায় আফগা‌নিস্তা‌নের এক‌টি টে‌লিকম কোম্পা‌নি‌তে কর্মরত বাংলা‌দেশি ইঞ্জিনিয়ার ও ব্র্যা‌কে কর্মরত বাংলা‌দেশি যারা দেশটিতে আট‌কা প‌ড়ে‌ছেন তারাও দে‌শে ফির‌বেন।

আফগা‌নিস্তা‌নের সর্ববৃহৎ টে‌লিকম কোম্পা‌নি আফগান ওয়্যার‌লে‌সে কাজ কর‌তেন বাংলা‌দেশি ইঞ্জিনিয়ার রা‌জিব বিন ইসলাম। তি‌নি কাবুল থে‌কে টে‌লি‌ফো‌নে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে ব‌লেন, আফগা‌নিস্তান থে‌কে দে‌শে ফেরার জন্য আমরা ২০ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা কর‌ছি।

তিনি আরও বলেন, কাবুল বিমানবন্দ‌রের বাইরে বর্তমা‌নে ৫০ থে‌কে ৬০ হাজার মানুষ অপেক্ষমান। তারা সবাই আফগা‌নিস্তান থে‌কে বাই‌রে যে‌তে চান। মা‌র্কিন বা‌হিনী ও তা‌লেবা‌নের উভ‌য়ের ছাড়পত্র ছাড়া ‌কেউ সেইফ প্যা‌সেস পা‌চ্ছেন না। আমরা সেইফ প্যা‌সে‌জের অপেক্ষায় আছি।

‌তি‌নি জানান, আফগান ওয়্যার‌লেস বাংলা‌দে‌শের গ্রামীণ ফো‌নের ম‌তো বড় কোম্পা‌নি। মা‌র্কিন বা‌হিনী ও আফগান কর্তৃপক্ষ যৌথভা‌বে ‌কোম্পা‌নি‌টি চালু ক‌রে‌ছে ।

জানতে চাইলে রা‌জিব ব‌লেন, কাবু‌লের প‌রি‌স্থি‌তি এখন অনেকটাই স্বাভা‌বিক। গা‌ড়ি চল‌ছে। দোকানপাট খু‌লে‌ছে। রাস্তায় তা‌লেবা‌নের টহল আছে। ভয়ভী‌তি ধী‌রে ধী‌রে কে‌টে যা‌চ্ছে ।

কূট‌নৈ‌তিক সূ‌ত্রে জানা গে‌ছে, ফ্লাইট‌টি ছাড়ার অনুম‌তি আগে দেওয়া হ‌য়ে‌ছিল । তা‌দের বো‌র্ডিং পাসও রে‌ডি ছিল। এত সংখ্যক আফগান তরুণী একস‌ঙ্গে দে‌শের বাই‌রে গে‌লে সুনাম ক্ষুণ্ন হয় কি-না তা নি‌য়ে তা‌লেবান কর্তৃপক্ষ ভাব‌তে শুরু করায় সেইফ প্যা‌সেস পে‌তে বিলম্ব হ‌চ্ছে । তা‌লেবান‌দের বোঝা‌নো হ‌চ্ছে, মে‌য়েরা দেশ ছে‌ড়ে যা‌চ্ছেন না। তা‌দের বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হওয়ায় উচ্চশিক্ষা নিতে যা‌চ্ছেন।

রা‌জিব বিন ইসলাম ব‌লেন, সেইফ প্যা‌সেস পাওয়া এখন বড় চ্যা‌লেঞ্জ।

এদিকে আফগানিস্তানে আট‌কেপড়া বাংলা‌দেশিদের জন্য তাদের প‌রিবা‌র বেশ উদ্বেগ- উৎকন্ঠা দেখা দি‌য়ে‌ছে।

শেয়ার করুন