সারাদেশে বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে মানসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এজন্য ‘বিদ্যমান গ্রিড উপকেন্দ্র ও সঞ্চালন লাইনের ক্ষমতাবর্ধন’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সরকার।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৭৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) লিমিটেড।
বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানান, এ প্রকল্পটির মাধ্যমে বিদ্যমান বিভিন্ন গ্রিড উপকেন্দ্রের ক্ষমতাবর্ধন করা হবে। নতুন ক্যাপাসিটর ব্যাংক স্থাপন ও পুরাতন সঞ্চালন লাইনের বিদ্যমান কন্ডাক্টর প্রতিস্থাপনের পাশাপাশি দ্বিতীয় সার্কিট স্ট্রিংগিংয়ের মাধ্যমে দেশব্যাপী বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ এবং মানসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। প্রকল্পটি ৭টি বিভাগের ২৫টি জেলার ৩০টি উপজেলা এবং ৫টি সিটি করপোরেশন এলাকায় বাস্তবায়ন করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানান, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জাতীয় গ্রিডে বিভিন্ন ক্ষমতার বৈদ্যুতিক সঞ্চালন নির্মাণ এবং উপকেন্দ্রের ক্ষমতাবর্ধনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ১০টি উপকেন্দ্রে মোট ২ হাজার ১৮৯ এমভিএ ক্ষমতাবর্ধন, ১৭টি উপকেন্দ্রে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সঞ্চালনে মোট ৬৩০ মেগাভার ক্ষমতার ক্যাপাসিটর ব্যাংক স্থাপন এবং বিদ্যমান ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাইনের ক্ষমতা বৃদ্ধি ও নতুন সঞ্চালন লাইন নির্মাণ হবে। এসব বিবেচনায় প্রকল্পটি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বিধায় ২৪ আগস্ট একনেকে এটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় যেসব কার্যক্রম করা হবে
বিদ্যমান ৫টি উপকেন্দ্রে নতুন ১০টি উচ্চক্ষমতার ট্রান্সফর্মার দ্বারা পুরাতন ট্রান্সফর্মার প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে মোট ১ হাজার ২০৪ এমভিএ ক্ষমতাবর্ধন, বিদ্যমান ৫টি উপকেন্দ্রে নতুন ৫টি ট্রান্সফর্মার স্থাপনের মাধ্যমে ৯৮৫ এমভিএ ক্ষমতাবর্ধন, ১৭টি উপকেন্দ্রে ৩৩ কেভি ভোল্টেজ লেভেলের ৬৩০ মেগাভার ক্যাপাসিটর ব্যাংক স্থাপন, বিদ্যমান ১৩২ কেভি ১৫১ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন রিকন্ডাক্টরিং, বিদ্যমান ১৩২ কেভি ৩৬ কিলোমিটার সিঙ্গেল সার্কিট সঞ্চালন লাইন রিকন্ডাক্টরিং, বিদ্যমান ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা ১৩২ কেভি ৪০ কিলোমিটার সিঙ্গেল সার্কিট সঞ্চালন লাইনে দ্বিতীয় সার্কিট স্ট্রিংগিং এবং ১৩২ কেভি ৬ কিলোমিটার নতুন সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) শরিফা খান বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং উৎপাদিত বিদ্যুৎ নির্ভরযোগ্য ও নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্রাহকগণের নিকট পৌঁছে দিতে উচ্চ মাত্রার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন এবং উপকেন্দ্রের ক্ষমতাবর্ধনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। দেশব্যাপী বিভিন্ন লোডসেন্টারে চলমান এবং ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যমান উপকেন্দ্র ও সঞ্চালন লাইনের ক্ষমতাবর্ধনের নিমিত্ত প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে প্রকল্প এলাকার জনসাধারণের বিদ্যুতের সুবিধা আরও বাড়বে।