নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এখনও টি-টোয়েন্টিতে জয় পায়নি বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে আজ বিকেল চারটায় শুরু হতে যাওয়া সিরিজে শুধু প্রথম জয় নয় বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক জানালেন, তারা জিততে চান সিরিজটিও। তবে সফরকারী দলটিকে হারাতে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে বলে মানছেন টাইগার অধিনায়ক।
ঘরের মাঠে বরাবরের মতো এবারও শক্তিশালী ভূমিকায় বাংলাদেশ দল। তার ওপর রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের তরতাজা আত্মবিশ্বাস। তবে জয়ের ধারায় থাকা টাইগাররা কিউইদের বিপক্ষেও শৃঙ্খলিত ক্রিকেট খেলুক এবং জয়ের জন্য ক্ষুধার্ত মনোভাবটা বজায় রাখুক, এমনটি চান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
গতকাল সিরিজ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘ওরা (নিউজিল্যান্ড) যে দলই নিয়ে এসেছে তা ভালো দল। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দলটি সুশৃঙ্খল। আমাদের প্রথম বল থেকেই ভালো খেলার মানসিকতা রাখতে হবে, যা অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ছিল। যে ক্ষুধার্ত মনোভাব ছিল, তা ধরে রেখে ম্যাচগুলো খেলা উচিত।’
নিজেদের ফেভারিট মানতে নারাজ টাইগার অধিনায়ক সমীহ করছেন দ্বিতীয় সারির বনে যাওয়া কিউই দলকে। জয়ের ক্ষেত্রে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ দলটিকে হারাতে হলে নিজেদের সেরাটা খেলতে হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড খুব ভালো হোমওয়ার্ক করে। যে পরিকল্পনা করে সেই পরিকল্পনাতেই সবসময় ঠিক থাকার চেষ্টা করে। ওদের সঙ্গে আমাদের ভালো খেলতে হলে শৃঙ্খলিত ক্রিকেট খেলতে হবে।’
গত মাসে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে চারটিতেই জিতেছে টাইগাররা। সে জয়ের অন্যতম কারিগর ছিল বোলাররা। চলমান সিরিজে এবার মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম এবং তিন স্পিনার সাকিব আল হাসান, নাসুম আহমেদ ও শেখ মেহেদি হাসানদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন আমিনুল ইসলাম। আছে সাইফ উদ্দিন-তাসকিন আহমেদ। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া সিরিজের বাজে ব্যাটিং ঘোচানোর দায়িত্বে নতুন করে যোগ দিচ্ছেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাশ। ধারাবাহিক রান পেতে মরিয়া হয়ে আছেন সাকিব-আফিফরা।
তবুও ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম এই সংস্করণে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হতে চাননা টাইগার অধিনায়ক। তার মতে, ‘টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট এমন যেখানে আপনি নিজেকে ফেভারিট ভাবতে পারেন, আবার অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হলে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’ তবে কন্ডিশনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফল নিজেদের পক্ষে আনার ক্ষেত্রেও বদ্ধ পরিকর টাইগার অধিনায়ক।
তিনি বলেন, ‘আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। মিরপুরের উইকেটের কন্ডিশনে মানিয়ে নেওয়াটাও গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যাশা সবসময়ই থাকবে। প্রত্যাশার জায়গা এভাবেই তৈরি হয়েছে। যখন আমরা ঘরের মাঠে খেলি তখন যে দলই আসুক, খেলা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়। আমরা চেষ্টা করি আমাদের কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে ফলাফল পক্ষে আনার। প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’
এদিকে অস্ট্রেলিয়া মাসখানেক আগে যেমন উইকেট পেয়েছে তেমন উইকেটের জন্যই প্রস্তুতি নিয়েছেন কিউইরা। অনভিজ্ঞ দলকে নিয়েও তারা জিততে চান সিরিজ। কিউইদের অধিনায়কের ভাষ্য, ‘বেশিরভাগ ছেলেরা নিউজিল্যান্ডের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলেছে। তবে সম্ভবত তারা যতটা চায় ততটা নয়। ক্রিকেটের এমন একটি দলের সঙ্গে থেকে আমাদের সেখান থেকে উপভোগ করতে হবে। আমাদের বিশ্বাস করতে হবে এই কন্ডিশনে আমরা সফল হব। সিরিজ জেতা আমাদের মূল লক্ষ্য।’
আজ শুরু হওয়া সিরিজের পরবর্তী ম্যাচগুলো ৩, ৫, ৮ ও ১০ সেপ্টেম্বর একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচটি ম্যাচই শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটায়। এই সংস্করণে এখন পর্যন্ত ১০টি ম্যাচ খেললেও নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারেননি বাংলাদেশ। এবার প্রথম জয়ের পাশাপাশি সিরিজ জিতে নেওয়ারও অনেক বড় উপলক্ষ টাইগারদের সামনে। ঘরের মাঠে তারা যে খুব ভালো দল সেটা সিরিজ জিতে আরেকবার প্রমাণ করতে চান মাহমুদউল্লাহ। তবে সিরিজ জয়ের আগে এখন আপাতত অপেক্ষা কিউইদের বিপক্ষে প্রথম জয়ের!