অফিসে বসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে না : হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন প্রয়োগের ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়া দরকার বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন অফিসে বসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে না। ঘটনাস্থলে গিয়ে এ আদালত পরিচালনা করতে হবে।

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।

একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইনের বিষয় যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা দরকার বলেও এসময় মন্তব্য করেন আদালত। পাশাপাশি বাল্যবিয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় দুই শিশুকে সাজা দেওয়ার ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিয়া সুলতানা ভুল স্বীকার করে ক্ষমার আবেদনটি নেত্রকোনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে (এডিএম) নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।

এর আগে বাল্যবিয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় দুই শিশুকে সাজা দেওয়ার ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিয়া সুলতানা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পাশাপাশি ভবিষ্যতে আর এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে অঙ্গীকার করেন। ওই সাজার ঘটনায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দাখিল করা লিখিত ব্যাখ্যায় ভুল স্বীকার ও ক্ষমা চাওয়া হয়। এর একটি কপি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের মাধ্যমে বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টে দাখিল করা হয়।

এর আগে হাইকোর্ট গত ৫ আগস্ট এক আদেশে সংশ্লিষ্ট ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারকের দেওয়া ব্যাখ্যার কপি আদালতে দাখিল করতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতি নির্দেশ দেন। নির্দেশে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের দাখিল করা লিখিত ব্যাখ্যার সত্যায়িত কপি হাইকোর্টে দাখিল করা হয়।

প্রেমের সম্পর্কের জেরে পারিবারিকভাবে গত ১ আগস্ট নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার শ্রীরামপাশা গ্রামের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর (১৫ বছর) সঙ্গে সমবয়সী মহেশ্বরখিলা গ্রামের একজনের বিয়ের আয়োজন করা হয়। এই বিয়ের খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিয়া সুলতানা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পুলিশ পাঠিয়ে তাদের আটক করে নিজ কার্যালয়ে নিয়ে একমাস করে সাজা দেন। এরপর তাদের গাজীপুর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ ঘটনা নিয়ে গত ৪ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে দণ্ড’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর ই-মেইলে চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তাদের মুক্তির নির্দেশনা চাওয়া হয় ওই চিঠিতে। কারো মুক্তির জন্য কোনো বিচারপতির কাছে চিঠি দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম। চিঠি পাওয়ার পরই গত ৪ আগস্ট হাইকোর্ট শিশু দুটিকে তাৎক্ষণিক মুক্তির নির্দেশ দেন।

শেয়ার করুন