দেশের আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ই-অরেঞ্জের’ বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এক ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলায় ভারতে আটক বনানী থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) সোহেল রানাকেও আসামি করা হয়। ১০ জনকে অভিযুক্ত করে দায়ের করা মামলাটি আদালতের নির্দেশে রাজধানীর গুলশান থানা পুলিশ গ্রহণ করে।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলাটি বৃহস্পতিবার দায়ের করা হলেও সোহেল রানা আটকের পর শনিবার বিষয়টি গণমাধ্যমে আসে।
গুলশানের ওসি বলেন, আদালতের আদেশে বৃহস্পতিবার মামলাটি নেওয়া হয়। এখন তদন্ত চলছে। গ্রাহকের ৭৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির ১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলায় ভারতে আটক বনানী থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) সোহেল রানাকে দশ নম্বর আসামি করা হয়।
মামলায় বাকি আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আমান উল্লাহ, নাজনিন নাহার বিথি, কাওসার, কামরুল হাসান, আব্দুল কাদের, নূরজাহান ইসলাম সোনিয়া ও রুবেল খান।
এর আগে ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়ার আদালতে ইসতিয়াক হোসেন টিটু নামে এক ব্যক্তি সোহেল রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলার আবেদন করেন। আদালত গুলশান থানাকে আবেদনটি এফএআর হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। পরবর্তী সময়ে থানা পুলিশ আবেদনটি এফএআর হিসেবে গ্রহণ করে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামিরা ই-অরেঞ্জ নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক, কর্মচারী ও সহযোগী। তারা ই-অরেঞ্জের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পণ্য সরবরাহ ও বিক্রি করেন। মামলার বাদী ও সাক্ষীরা প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে পণ্য কেনার জন্য নগদ/বিকাশ/ক্রেডিট কার্ড/ডেবিট কার্ড/ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় ও তারিখে অর্থ প্রদানের মাধ্যমে ভাউচার গ্রহণ করেন। পরে ক্রেতাদের নিজ নিজ ই-অরেঞ্জ অ্যাকাউন্টে বাদীসহ আম-মোক্তারনামা ১০ জন ৭৬ লাখ ৪১ হাজার ১০২ টাকা টাকা প্রদান করেন। টাকা প্রদানের পর পণ্য না দিয়ে এ অর্থ আসামিরা আত্মসাৎ করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, মামলার বাদী ও সাক্ষীরা পণ্য কেনার পর তাদের পণ্য সরবরাহ এবং ডেলিভারি প্রদান করেনি। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কিছু দিনের মধ্যে মালামাল সরবরাহ করবে বলে জানায়। পরে বাদী ও সাক্ষীরা জানতে পারেন যে, ই-অরেঞ্জ নামের প্রতিষ্ঠানটি তাদের মালিকানা পরিবর্তন করেছে।
এদিকে বনানী থানার পরিদর্শক সোহেল রানা কোচবিহার জেলার চ্যাংরাবান্ধা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে আটক হন। শনিবার তার আটকের বিষয়টি জানায় ভারতের কোচ বিহারের সংবাদ মাধ্যম উত্তরবঙ্গ সংবাদ।
ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, সীমান্ত টপকে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে শুক্রবার কোচবিহার জেলার চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত থেকে এক বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করে বিএসএফ। তার কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বিদেশি পাসপোর্ট, একাধিক মোবাইল, এটিএম কার্ড। শনিবার তাকে মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে খবরে।
ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, আটক ব্যক্তি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা শেখ সোহেল রানা। তিনি ঢাকায় বাংলাদেশ মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মকরত। সে দেশে তার নামে অপরাধমূলক একাধিক কাজের অভিযোগ রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছেন বিএসএফের কর্মকর্তারা।