একই স্থানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই কাদের মির্জা ও তাঁর ভাগনে উপজেলা আওয়ামী লীগের মাহবুবুর রশিদ মঞ্জুর ডাকা পাল্টাপাল্টি প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার কারণে নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জের রংমালা বাজারসহ চারপাশের ৫ কিলোমিটার এলাকায় রোববার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জিয়াউল হক মীর।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উত্তেজনার ফলে রোববার সকাল-সন্ধ্যা ১২ ঘণ্টার জন্য উপজেলার রংমালা বাজার ও আশপাশের পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। এ সময়ের মধ্যে ওই এলাকায় গণজমায়েত, সভা-সমাবেশসহ রাজনৈতিক সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকবে।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. শহীদুল হক বলেন, ঘোষিত ১৪৪ ধারা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকায় আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
রংমালা দারুসছুন্নাহ মডেল মাদরাসার সভাপতির পদ নিয়ে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও তার ভাগনে উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশিদ মঞ্জুর পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা নিলো প্রশাসন।
এর আগে শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে ওই মাদরাসার সভাপতির পদ থেকে কাদের মির্জার অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতা ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী বাবুলকে বাদ দিয়ে মাহবুবুর রশিদ মঞ্জুকে সভাপতি করার প্রতিবাদে রোববার সকাল ১০টায় রংমালা বাজারে প্রতিবাদ সভার ডাক দেন কাদের মির্জা। পরে একইদিন রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ও কাদের মির্জার ভাগনে মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের লাইভে এসে রংমালা মাদরাসার অধ্যক্ষ আবদুল্লাহ আল মামুনকে অপমান ও দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে রোববার একই সময় রংমালা বাজারে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
গত সাত মাস ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নিজ উপজেলা নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জে আওয়ামী লীগের সংঘাত-সহিংসতা লেগেই আছে। এতে একপক্ষে তার ছোটভাই পৌরমেয়র আবদুল কাদের মির্জা এবং অপর পক্ষে তার তিন ভাগনেকে নিয়ে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এ দুই পক্ষের রাজনৈতিক সংঘর্ষে এরই মধ্যে এক সাংবাদিকসহ দুজন নিহত ও শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। থানা ও আদালতে অর্ধশতাধিক মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় উভয় পক্ষের শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন।