সম্প্রতি ব্যাপক আলোচিত ও সমালোচিত ই-কমার্স প্লাটফর্ম ইভ্যালিতে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের যে ঘোষণা দিয়েছিল যমুনা গ্রুপ তা থেকে সরে এসেছে দেশের শীর্ষ শিল্প গ্রুপটি।
সোমবার যমুনা গ্রুপের পরিচালক (মার্কেটিং, সেলস অ্যান্ড অপারেশন্স) ড. মোহাম্মদ আলমগীর আলম তার ফেসবুকে ‘জরুরি গণবিজ্ঞপ্তি’র মাধ্যমে এই ঘোষণা দেন।
ফেসবুকে তিনি লেখেন, যমুনা গ্রুপ ব্যবসা পরিচালনায় উৎপাদনমুখী ও গঠনমূলক ব্যবসায়িক নীতিকেই গুরুত্ব দেয়, যা দেশের শিল্প অবকাঠামোগত ব্যাপকভিত্তিক উন্নয়নের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে লাখ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ও জীবন-জীবিকার সংস্থানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছে।
আলমগীর আলম বলেন, সুচিন্তিত পরিকল্পনায় সুদূরপ্রসারী ব্যবসায়িক সমৃদ্ধির নিশ্চয়তা ছাড়া এবং কোনো চূড়ান্ত বিনিয়োগের আগে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা এবং পুনঃপর্যালোচনা ছাড়া কোনো ব্যবসায়িক খাতে শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করার অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যমুনা গ্রুপ দীর্ঘ সময়ের কষ্টার্জিত অর্থ, সুনাম, মেধা ও সক্ষমতাকে ঝুঁকিতে ফেলতে রাজি নয়। অন্য কোনো কোম্পানিতে যমুনা গ্রুপের অর্থ বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত, এখতিয়ার এবং অধিকার শুধুমাত্র যমুনা গ্রুপের একান্ত বিষয়, এটি কারো অনুরোধে ঢেঁকি গেলার বিষয় নয়। অন্য কোনো কোম্পানির কোনো অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যমুনা গ্রুপ কোনো দায় অতীতেও নেয়নি, ভবিষ্যতেও নেবে না। ইহা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য অবহিত করা হলো।
এদিকে সংবাদমাধ্যমকে ড. মোহাম্মদ আলমগীর আলম বলেন, আমরা তাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখেছি সেখানে বিনিয়োগ করা আমাদের জন্য লাভজনক হবে না। এজন্য আমরা আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি।
এর আগে গত ২৭ জুলাই যমুনা গ্রুপ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল ইভ্যালিতে তারা এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। যমুনা গ্রুপের গ্রুপ পরিচালক মনিকা ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ইভ্যালি ও যমুনা গ্রুপের মধ্যে সমঝোতা স্বারক হয়েছে আজ। আমরা ইভ্যালিতে বিনিয়োগ করছি। আপাতত এখন আমরা ১০০-২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করব। পরবর্তীতে প্রয়োজন মতো ধাপে ধাপে আমরা এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবো।
সময়মত গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহ না করাসহ নানা অভিযোগে সম্প্রতি প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়ে ইভ্যালি। গত বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া এক হিসাবে দেখা যায়, পণ্য সরবরাহকারীরা ইভ্যালি কাছে থেকে প্রায় ২০৬ কোটি টাকা পাবেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হিসাব বিবরণীতে ইভ্যালি জানিয়েছে, গত ১৫ জুলাই পর্যন্ত মার্চেন্টদের কাছে ২০৫ কোটি ৮৬ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮৩ টাকা তাদের দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে।