তিনি অমর নায়ক। নব্বই দশকের সবচেয়ে সুন্দর ও মেধাবী নায়কও বলা হয় তাকে। সবচেয়ে সফলও। ঢাকাই সিনেমার নায়কদের নিয়ে কথা বলতে গেলেই তার ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠে সবার আগে। তিনি ঢালিউডের পোস্টার বয় সালমান শাহ।
আজ তার মৃত্যুবার্ষিকী। দেখতে দেখেতে ২৫ বছর পেরিয়ে গেল তিনি নেই। ১৯৯৬ সালের আজকের এই দিনে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান সালমান। মৃত্যুর দুই যুগ পরও চলচ্চিত্রের মানুষেরা আফসোস করে বলেন, ‘আজও কেউ পূরণ করতে পারেননি সালমান শাহের শূন্যস্থান।’
এই সময়ের নায়কদের কাছে তাদের প্রিয় নায়কের নাম জানতে চাওয়া হলে অকপটে তারাও বলেন প্রিয় সালমান শাহের নাম।
নাম নিয়েই যখন কথা, জেনে নেয়া যাক তার পারিবারিক নাম ও পরিচয়। তার বাবা-মায়ের দেয়া নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। চলচ্চিত্রে এসে নাম নেন ‘সালমান শাহ’। ১৯৭০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবার নাম কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। তিনি ছিলেন পরিবারের বড় ছেলে। সালমান শাহ ১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট ভালোবেসে বিয়ে করেন সামিরাকে।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর চিরবিদায় নেন তিনি। হারিয়েও যেন হারাননি তিনি। কোটি ভক্তের হৃদয়ে সোনালী অক্ষরে লেখা আছে তার নাম। আজও সালমান যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত সেখানে তার ভক্তরা ছুটে যান শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা নিয়ে। প্রিয় নায়কের জন্য দোয়া করতে করতে নীরবে চোখের জল ফেলেন।
যেদিন সালমান শাহের মৃত্যু হয় সেই দিন তার মৃত্যুতে সারাদেশে শোক নেমে এসেছিল। শোক সইতে না পেরে অনেক ভক্ত আত্মাহুতির পথও বেছে নিয়েছিলেন, এমনটাও শোনা গেছে। এরপর অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে বাংলা চলচ্চিত্রশিল্প। কিন্তু সালমানের বিকল্প হয়ে ওঠতে পারেননি কেউ।
তার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ছবি করা নায়িকা শাবনূর আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘সালমান বেঁচে থাকলে আমরা দুজনে উত্তম-সুচিত্রার মতো হতে পারতাম। সালমানের বিকল্প আমি আর কাউকে পাইনি।’
মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্র জীবনে সালমান শাহ ২৭টি ছবিতে নায়ক ছিলেন। অল্প দিনের ক্যারিয়ার। কিন্তু যা কাজ করেছেন মন দিয়ে করে গেছেন। তার অভিনয়, পোশাক, স্টাইল, সংলাপ প্রয়োগ; সবই যেন সময়ের চেয়েও অনেক বেশি আধুনিক ছিলো। এগিয়ে ছিলো। দর্শকরা আজও তার ছবিগুলোকে এড়িয়ে যেতে পারেন না। টেলিভিশনের পর্দায় তার অভিনীত ছবি প্রদর্শন হলে হুমড়ি খেয়ে পড়েন দর্শক।
আজ সালমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা কোটি ভক্তরা শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন নানা আয়োজনে। কেউ লিখছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কেউ আবার মিলাদ মাহফিলেরও আয়োজন করছেন। এভাবেই যুগ থেকে যুগে সবার কাছে চিরসবুজ অমর নায়ক হয়ে বেঁচে থাকবেন সালমান শাহ।