বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যে দেশে রাজনৈতিক নেতাদের কোনো সম্মান নেই, জনপ্রতিনিধিরা চুরি করে জনপ্রতিনিধি হয়, মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই, সে দেশে কখনোই সত্য প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তা বিএনপির নয়, তা সকলের সংকট। আওয়ামী লীগ লুটপাট ও পাচার করে যেভাবে দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে তা প্রতিরোধ করতে না পারলে স্বাধীনতাই থাকবে না। অস্তিত্ব হারিয়ে একটি তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত হবে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপি আয়োজিত এক মতবিনিময়সভায় এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, যে জিয়াউর রহমান ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হতো না, যুদ্ধ না করলে এ দেশ স্বাধীন হতো না। আওয়ামী লীগ সেই জিয়াউর রহমান সম্পর্কে অশ্লীল কথা বলে। তারা এতটা ধর্মহীন হয়েছে যে- কবর নিয়েও কথা বলে। তাই কটূক্তি ও মিথ্যাচার করা বাদ দিয়ে মানুষের সমস্যা সমাধান করবার জন্য আসুন এবং নিজেদের ব্যর্থতার জন্য পদত্যাগ করে সুষ্ঠু নির্বাচন কমিশন গঠন করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। মানুষকে রক্ষা করুন, তা না হলে জনগণ সরকারকে ঘাড় ধরে টেনে নামাবে।
তিনি বলেন, গোটা দেশ এখন জেলে পরিণত হয়েছে। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই জেল ভাঙতে হবে এবং মুক্ত হতে হবে। জনগণ জেগে উঠলে সবাই পালাতে বাধ্য হবে। জনগণকে জাগিয়ে তুলতে হবে এবং সে দায়িত্ব বিএনপির। তাই নিজেদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং আন্দোলনের মাধ্যমে ভয়াবহ দানবকে সরিয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
সভায় বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির সভাপতি রাজিউর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফসহ জেলা ও উপজেলা বিএনপি অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির সভা শেষে জেলার অন্যান্য উপজেলা হরিপুর, রাণীশংকৈল ও পীরগঞ্জে উপজেলা বিএনপির মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে এখন বিএনপি সমর্থকদের চাকরি নেই। যারা চাকরি পাচ্ছেন তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের কনস্টেবল চাকরি নিতে এখন ২০ লাখ টাকা দিতে হয়। যে পুলিশের কাছে মানুষ চোর-ডাকাত ধরতে সাহায্য নিতে যায় সেই পুলিশই এখন চোর-ডাকাত হয়ে বসে আছে। পুলিশরা এখন আওয়ামী লীগের নেতা ও এমপিদের ওপর খবরদারি করে বলে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নিয়ে এসেছে তারা। তাই মাছের রাজা ইলিশ আর দেশের রাজা পুলিশ।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে এই সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারবে না। কথা বললেই তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ দুর্নীতিবাজ সরকার, তারা প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি করছে। তারা ১০ টাকার জিনিস কিনছে ১০ হাজার টাকা দিয়ে। করোনা নিয়েও আওয়ামী লীগ ব্যবসা করেছে। টিকা না পাওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের দুর্নীতিই দায়ী।
রোহিঙ্গারা এ দেশে চলে আসলেও এই সরকার কোনো কথা বলতে পারছে না কারণ, তাদের দয়ায় এই সরকার ক্ষমতায় টিকে আছে বলে দাবি করেছেন মির্জা ফখরুল। আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সরকার নয়, তারা তাবেদার ও পুতুল সরকারে পরিণত হয়েছে।