রুয়েট বাসচালককে কুপিয়ে হত্যায় ৪ জনের যাবজ্জীবন

রাজশাহী প্রতিনিধি

রুয়েট
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) বাসচালক আব্দুস সালামকে (৫০) কুপিয়ে হত্যা মামলায় ৪ যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহীর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এ রায় দেন।

universel cardiac hospital

কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-নগরীর বাজেকাজলা মহল্লার সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাব্বির হোসেন, একই এলাকার ভাড়াটিয়া দিলদার আলীর ছেলে নূর নবী হোসেন হৃদয়, নগরীর কাজলা বিলপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে সানোয়ার হোসেন সাইমুন এবং একই এলাকার মৃত ইসহাক আলীর ছেলে সোহেল রানা।

চারজনের মধ্যে সোহেল রানা রুয়েটের দৈনিক মজুরিভিত্তিক নৈশপ্রহরী ছিলেন। আদালত চার আসামির প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

তবে রায় ঘোষণার পর কারাগারে নেওয়ার সময় আসামিরা গণমাধ্যমকর্মীদের চিৎকার করে দাবি করেন, এসব ভুয়া, মিথ্যা এবং সাজানো নাটক। তারা ন্যায়বিচার পাননি।

দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মামলায় আরও দুজন কিশোর আসামি আছে। তাদের বিচার চলছে শিশু আদালতে। অন্য চার আসামির বিচার শেষ হলো দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে। এ রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে রুয়েট-সংলগ্ন অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে রাস্তার ওপর বাসচালক আবদুস সালামকে কুপিয়ে আহত করা হয়। সালামের চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এসে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বড়ছেলে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে নগরীর মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার চারদিন পর এক কিশোরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হয়।

আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, নৈশপ্রহরী সোহেল রুয়েটের ভেতরে আশপাশের কমবয়সী ছেলেদের নিয়ে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ গঠন করেছিলেন। ওই গ্রুপ রুয়েটের এক কর্মচারীর নাতিকে মারধর করেছিল। এরপর বাসচালক সালামের কাছেই তারা মীমাংসার জন্য যায়। সালাম তখন এটি মীমাংসার জন্য চার লাখ টাকা দাবি করেন। এতে বিষয়টির আর মীমাংসা হয়নি। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে চার মাস পর তাকে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এক কিশোর এ তথ্য দেয়।

এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

শেয়ার করুন