দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার একদিন পর বিএনপি বলছে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির পক্ষ থেকে কয়েকটি শর্তের কথাও বলেন৷ তিনি বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশন হতে হবে নিরপেক্ষ। ভোটের আগে তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে এবং তাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন। মহিলা দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনার আয়োজন করা হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবে।
গত দুই দিন আগে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, উনি (শেখ হাসিনা) নির্বাচনের কথা বলেছেন, তার দলের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় সবাইকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। কোন নির্বাচন? যে নির্বাচন শুধু আপনাকে নির্বাচিত করবে সেই নির্বাচন?
তিনি বলেন, যে নির্বাচনে আমাদের জনগণ যারা ভোটার আছে তারা ভোট দিতে যেতে পারবে না এবং তাদের বাড়িঘর আক্রমণ করা হবে, ভোটকেন্দ্রে গেলে তাদের বেইজ্জতি করা হবে, নির্যাতন করা হবে, সেই নির্বাচন? যে নির্বাচনের আগের রাত্রেই আপনারা দখল করে নিয়ে চলে যাবেন, সেই নির্বাচন? যে নির্বাচন আপনাদের ক্ষমতায় যাওয়ার আরেকটা পথ সুগম করবে, সেই নির্বাচন? আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশে আর সেই ধরনের নির্বাচন হবে না। আমাদের খুব পরিষ্কার কথা, নির্বাচন একটা হবে। সেই নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, সেই নির্বাচন হতে হবে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায়।
ফখরুল ভোটে যাওয়ার শর্ত হিসেবে বলেন, সবার আগে গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে এবং একই সঙ্গে মুক্ত করতে হবে যারা কারাগারে আছেন গণতন্ত্রের কর্মী-নেতা, শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে যাদের আটক করে রাখা হয়েছে তাদের মুক্তি দিতে হবে। আর ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা আছে, সেই মামলাগুলোকে প্রত্যাহার করতে হবে। এর আগে কোনো নির্বাচন হবে না এ দেশে।
নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে সংসদে আইন প্রণয়নে আপত্তিও জানান ফখরুল। বলেন, আমরা বলতে চাই, নির্বাচন কমিশন গঠন হবে তখনই যখন সত্যিকার অর্থেই একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন হতে পারে, সেই ব্যবস্থা তৈরি করা হয়। আইন করা হবে বলছেন। কোন আইন?
তিনি বলেন, আপনারা আইন করবেন পার্লামেন্টে, যেখানে আর কেউ নেই, কথা বলার সুযোগ নেই বা আপনারা একতরফা আইন পাস করে নিয়ে যাবেন আপনাদের সুবিধার জন্য। সেই আইনের মধ্য দিয়ে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলে সেটাও এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না।