শরিয়াভিত্তিতে লভ্যাংশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রাহকদের ১৭ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসানসহ তার চার ভাইয়ের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে শুনানি শেষে পিরোজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ম. মহিউদ্দিন আসামিদের রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করেন।
আদালতে বাদীপক্ষের হয়ে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এম ডি নুরুল ইসলাম সরদার শাহজাহানসহ জেলা আইনজীবী সমিতির আইনজীবীরা। অন্যদিকে আসামি পক্ষের কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
পিরোজপুরের এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেডের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে গ্রাহকের টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানের নামে জমি না কিনে মুফতি রাগীব আহসান এবং তার আত্মীয়স্বজনের নামে জমি কেনা হয়েছে। সে সব জমির ৯০ শতাংশ গোপনে বিক্রি করে তিনি টাকা আত্মসাৎ করেন। পাশাপাশি এহসান গ্রুপের ১৭টি প্রতিষ্ঠানের ১৬টিই উধাও হয়ে গেছে বলে জানানো হয়েছে। রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এহসান টাকা জমাকৃত ভুক্তভোগী গ্রাহকবৃন্দ ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এই গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসান মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন। তিনশ কর্মচারী খাটালেও তাদের বেতন দিতে হতো না। তারাই গ্রাহক জোগাড় করে এনে দিতেন। গ্রাহকের পাশাপাশি এই কর্মচারীরাও প্রতারণার শিকার হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর তোপখানা রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাগীব আহসান (৪১) ও তার সহযোগী আবুল বাশার খানকে (৩৭) গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভাউচার বই, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়। এছাড়া পিরোজপুরে গ্রেপ্তার হয়েছে তার আরও দুই ভাই।
কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে শুক্রবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাগীব আহসান প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য দিয়েছেন। ২০১৮ সাল থেকে তার প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের টাকা দিতে পারছে না। এ কারণে এরই মধ্যে ১৫টির বেশি মামলা হয়েছে। প্রতারণার কারণে রাগীব আহসান ২০১৯ সালে গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করেন।