মিডিয়া-টকশোর কথা শুনে দেশ চালাই না: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

মিডিয়ায় যা প্রচার হয় কিংবা টকশোতে যা বলা হয় তা শুনে দেশ চালান না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের মানুষের যা উপকার হবে সেটাই তিনি বিবেচনায় রাখেন বলে জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

universel cardiac hospital

সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের যারা সমালোচনা করেন তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিডিয়ায় কী লিখল আর টকশোতে কী বলল সেটা শুনে দেশ পরিচালনা করি না। দেশ পরিচালনা করি জনগণের কথা চিন্তা করে। কারণ আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছেন। বছরের পর বছর এই স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছেন। আমি আমার বাবা ও মায়ের কাছ থেকে যা শিখেছি তা অনুযায়ী দেশ চালাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে হতাশার কথা লেখে বদঅভ্যাস থেকে। আমরা যতই কাজ করি, বলে এটা কেন। আমি বলি, কিছু লোক আছে-যাকে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা। এজন্য কারো সমালোচনায় যেমন হতাশ হই না তেমনি কারো কথা দ্বারা উৎসাহিতও হই না।’

সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন তাদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে বলে, মেগা প্রজেক্টের কী দরকার। মূলত তাদের বক্তব্য হলো, বাংলাদেশের উন্নয়নের কী দরকার! নিজের টাকা হলেই তো হলো! পদ্মা সেতু নিয়ে যে দুর্নীতির কথা উঠেছিল প্রমাণ করতে পারেনি বিশ্বব্যাংক। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করছি এবং এর কাজ শেষ পর্যায়ে। আশা করি ২০২২ সালের জুনেই পদ্মা সেতুতে গাড়ি চলবে।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।

প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার যেনতেনভাবে উন্নয়ন নয়, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নতি করছে। তিনি জানান, তার সরকারের মূল লক্ষ্য দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সে লক্ষ্যেই সরকার কাজ করছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯৬ সাল থেকে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষকে ঘর করে দিয়েছি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। আমরা নয়টি জায়গায় দুর্নীতি পেয়েছি। ১০/১২টি জায়গায় বৃষ্টির কারণে ঘর ভেঙে গেছে। আর তিন শতাধিক স্থানে খুচিয়ে খুচিয়ে ঘর ভাঙা হয়েছে। এটা কিন্তু দুর্নীতির কারণে হয়নি। এটা কারা করেছে? এ বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। এরেস্টও হচ্ছে।’

দেশে করোনাভাইরাসের টিকার আর কোনো সমস্যা নেই জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘প্রায় ২৪ কোটি টিকা আমরা কিনবো। টিকার আর কোনো অসুবিধা হবে না। দেশে যাতে ভ্যাকসিন তৈরি হয় ইতিমধ্যে চুক্তি হয়ে গেছে। এর বাইরেও আমরা ল্যাব তৈরি করছি।’

স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে বলে বিরোধী দলীয় সাংসদদের অভিযোগের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রশ্ন রাখেন, স্বাস্থ্যসেবা কীভাবে ভেঙে গেল? এ সময় তিনি করোনাকালে স্বাস্থ্যসেবায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে আবারও মুক্তিযুদ্ধে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি আবারও দাবি করেন, চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ নেই। ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি জানিয়ে তিনি বলেন, ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ নেতারা ধরে এনে তাকে দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করান।

শেয়ার করুন