ইভ্যালি বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন রাসেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিইও মো. রাসেল

আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি আন্তর্জাতিক কোনো কোম্পানির কাছে বিক্রির চেষ্টা চলছিল বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার রাসেল দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা একটি বিদেশি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের লোভনীয় অফার (১:২) এর আলোকে ইভ্যালির ব্যবসায়িক স্ট্রাটেজি তৈরি করেছিল। ব্যবসায়িক ভবিষ্যত কর্ম পরিকল্পনা সম্পর্কে গ্রেপ্তাররা জানিয়েছেন ইভ্যালিকে প্রথমত একটি ব্রান্ড ভ্যালু তৈরির পরিকল্পনা করে। অতঃপর দায়সহ কোনো প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোম্পানির কাছে বিক্রি করে লভ্যাংশ নিয়ে নেওয়া।

এ উদ্দেশ্যে তারা বিভিন্ন দেশও ভ্রমণ করেছেন। অন্যান্য পরিকল্পনা সমূহের মধ্যে ছিল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির কাছে তাদের শেয়ারের অফার দিয়ে প্রলুব্ধ করে দায় চাপিয়ে দেওয়া। এছাড়া তিন বছর পূর্ণ হলে শেয়ার মার্কেটে অন্তর্ভুক্ত হয়ে দায় চাপানোর পরিকল্পনাও নেন তারা।

র‌্যাব মুখপাত্র জানান, দায় মেটাতে বিভিন্ন অজুহাতে ‘সময় বৃদ্ধি’ করার আবেদন একটি অপকৌশল মাত্র। সর্বশেষ তিনি দায় মেটাতে ব্যর্থ হলে “দেওলিয়া ঘোষণার” পরিকল্পনা করেছিলেন।

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ইভ্যালির অন্যতম কর্ণধার রাসেল ও তার পত্নী পরিকল্পিতভাবে একটি পরিবার নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়িক গঠনতন্ত্র তৈরি করেন। একক সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বেচ্ছাচারিতা করার অবকাশ রয়েছে। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতি রয়েছে। ফলে ক্রমান্বয়ে প্রতিষ্ঠানের দায় বৃদ্ধি হতে হতে বর্তমানে প্রায় অচলাবস্থায় উপনীত হয়েছে। এই অচলাবস্থা হতে উত্তরণে দিশেহারা হয়ে পড়েন গ্রেপ্তার দুজন। বিভিন্ন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে দায়; গ্রাহকদের নিকট দায় নিয়ে বিচলিত প্রতিষ্ঠানটি। ইভ্যালির নেতিবাচক ব্যবসায়িক স্ট্রাটেজি উন্মোচিত হওয়ায় অনেক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও পেমেন্ট গেটওয়ে ইভ্যালি থেকে সরে এসেছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলকে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৪০৩ কোটি টাকা দেনা থাকা ইভ্যালির দুই কর্ণধারকে নেওয়া হয় র‌্যাব সদরদপ্তরে। পরে শুক্রবার তাদেরকে প্রতারণার মামলায় গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়।

শেয়ার করুন