ডেঙ্গু প্রতিরোধে আরও সতর্ক হওয়া জরুরি

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

ডেঙ্গু
ফাইল ছবি

করোনার চলমান পরিস্থিতি কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে এলেও দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর জন্য আলাদা চিকিৎসাব্যবস্থা থাকলেও ভয়ের কারণ হলো- রোগীর সংখ্যা যে দিন দিন বেড়েই চলেছে।

গত ১ জানুয়ারি থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার ৭০১ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৪ হাজার ৫৩৫ জন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৯ জন। চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট হাসপাতালে ভর্তি ১৫ হাজার ৭০১ জনের মধ্যে জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯, মার্চে ১৩, এপ্রিলে তিন, মে মাসে ৪৩, জুনে ২৭২ এবং জুলাইয়ে ২ হাজার ২৮৬, আগস্টে ৭ হাজার ৬৯৮ এবং ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫ হাজার ৩৪৬ জন রোগী ভর্তি হন।

universel cardiac hospital

বিশ্বজুড়েই ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ২০১৯ সালে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী গত ৩০ বছরে বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে ৩০ গুণ। ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এই মশা সাধারণত ভোরবেলা ও সন্ধ্যার আগে কামড়ায়। সাধারণ চিকিৎসায়ই ডেঙ্গু সেরে যায়, তবে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম বা হেমোরেজিক ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। বর্ষার সময় সাধারণত এ রোগ বৃদ্ধি পায়।

মশক ও এর লার্ভা নিধনই হচ্ছে ডেঙ্গু রোগের প্রধান চিকিৎসা। এরপর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। এর প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত হচ্ছে দেশের সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো। যে হারে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে চলেছে—সংশ্লিষ্ট সব মহলের এ বিষয়ে মনোযোগ আরো বাড়াতে হবে, নইলে করোনা আর ডেঙ্গু মিলে আমাদের আরো পর্যুদস্ত করে তুলবে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে নাগরিকদের সম্পৃক্ত করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা আইন অমান্য করবে, তাদের জরিমানা করার পাশাপাশি জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে সম্পৃক্ত করতে হবে।

লেখক : সংসদ সদস্য,
যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, পঁচাত্তর-পরবর্তী প্রতিরোধ যোদ্ধা,
সম্পাদক, মত ও পথ।

শেয়ার করুন