বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। জাতিসংঘের এই সংস্থাটির মতে, বায়ুদূষণ প্রতিরোধ করতে এখনই জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে বায়ু দূষণের কারণে বেশি প্রাণহানি হওয়া দেশগুলোতে শ্বাসযন্ত্র ও হৃদরোগজনিত রোগে মানুষের মত্যু কমাতে বায়ুর মান নিয়ে নতুন এক নির্দেশনা দিয়েছে ডব্লিউএইচও। ২০০৫ সালের পর এই প্রথম এই ধরনের নির্দেশনা দিল সংস্থাটি।
ওই নির্দেশনায় ১৯৪টি সদস্য দেশকে বায়ুতে বস্তুকণা এবং নাইট্রোজেন অক্সাইডসহ অন্যান্য উপদানের উপস্থিতির মাত্রার সর্বোচ্চ সীমা কমানোর পরামর্শ দিয়েছে ডব্লিউএইচও। বায়ু দূষণের কারণে কার্ডিওভাসকুলার ও শ্বাসযন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বায়ু দূষণের কারণে বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রতি বছর প্রাণ হারায় ২০ লাখ মানুষ। বায়ু দূষণের কারণে সৃষ্ট ফুসফুস ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে এসব অকাল মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকে।
বিশ্বব্যাপী মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম পরিবেশগত হুমকি বায়ুদূষণ। এয়ার কোয়ালিটি গাইডলাইনস বিষয়ক নতুন নির্দেশনায় ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, বায়ুদূষণ প্রতিরোধ করতে এখনই জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ বিশ্বজুড়ে বায়ুর মানের সূচক নিম্নমুখী। যা মানুষের স্বাস্থের ওপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করছে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে অস্বাস্থ্যকর খাবার ও ধূমপানের চেয়েও বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করছে বায়ু দূষণ।
বৈশ্বিক এই সংস্থাটির মতে, বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম পরিবেশগত হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে বায়ুর মান নিয়ে তাদের নতুন গাইডলাইন বায়ু দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে লাখ লাখ মানুষকে সুরক্ষা দেবে বলে মনে করছে ডব্লিউএইচও।
এদিকে ডব্লিউএইচও’র এয়ার কোয়ালিটি গাইডলাইনস বিষয়ক নতুন নির্দেশনায়, বাতাসে ভাসমান কণার পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম১০ ও পিএম২.৫, ওজোন, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইড ইত্যাদির বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, হালনাগাদ নির্দেশনা অনুযায়ী চললে এবং বায়ু দূষণ কমিয়ে আনলে পিএম২.৫ এর কারণে হওয়া প্রাণহানির প্রায় ৮০ শতাংশ কমানো সম্ভব।
সূত্র: রয়টার্স