সানরাইজার্সের দুই ওপেনার শুরুর ৫ ওভারে তুলেছিল ৫৬ রান। স্কোরবোর্ডে শতরান আসে ১০ ওভারের মাঝামাঝি। পরে জয়ের লক্ষ্য দাড়ায় ৫৭ বলে ৬৫ রান। হাতে তখনও ৯ উইকেট। ক্রিজে থিতু হয়ে থাকা জেসন রয় আর উইলিয়ামসন। হিসেবটা সহজ মনে না হলেও শুরুর দিকে খরুচে থাকা বোলাররা শেষের দিকে জটিলই করে ফেলেছিলেন। খনিকের জন্য আশাও জাগিয়েছিলেন রাজস্থানের বোলাররা। তবে সেটা মোস্তাফিজকে টানা দুই চার মেরে ভেঙে দিয়েছেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। অবশ্য ম্যাচের পাল্লা হায়দরাবাদের দিকে ঝুঁকেছিল চেতেন সাকারিয়ার ১৬ রান দেওয়া ওভারেই!
দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) ম্যাচের শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে হারিয়ে ১৬৪ রান সংগ্রহ করে মোস্তাফিজুর রহমানের রাজস্থান রয়্যালস। জয়ের লক্ষ্য থাকা ১৬৫ রান দুই ফিফটিতে অনেকটা অনায়াসেই পেরিয়ে যায় হায়দরাবাদ। আর তাতেই যেন জমে উঠল ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক এই আসর। রাজস্থানকে হারিয়ে লিগ টেবিলের অঙ্কটা একটু জটিলই করে দিয়েছে হায়দরাবাদ। জিইয়ে রেখেছে প্লে অফে যাওয়ার ক্ষীণ আশাও।
এই মুহূর্তে ১০ ম্যাচে সমান ৮ জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে যথাক্রমে শীর্ষে আছেন চেন্নাই ও দিল্লি। ১২ পয়েন্ট কোহলির ব্যাঙ্গালুরুর। রাজস্থান রয়্যালসকে সোমবার হারিয়ে দিয়ে সঞ্জু স্যামসনদের চাপ বাড়াল হায়দরাবাদ। ১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকার ছয়ে থাকলেও বেশ অস্বস্তিতেই পড়ে গেল রাজস্থান। যদিও হায়দরাবাদের চার পয়েন্ট বাদে বাকি চার দলেরই একই পয়েন্ট, ৮। বাকি ম্যাচ গুলোতে সম্ভাবনা জাগাচ্ছে চার দলই। হায়দরাবাদের আশা ক্ষীণ হলেও ৮ পয়েন্ট নিয়ে থাকা মুম্বাই, পাঞ্জাব, কোলকাতা ও রাজস্থান নিশ্চয়ই ছেড়ে কথা বলবে না! টেবিলের সেরা তিনে থাকা দলও তাদের জায়গা ধরে রাখতে মরিয়া থাকবে। পয়েন্ট তালিকার হিসেবে এই মুহূর্তে জটিল হয়েছে প্লে অফ।
সোমবার রাতে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন। যদিও ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো হয়নি গোলাপিদের। পেসার ভুবনেশ্বর কুমারে সাজঘরে ফেরেন এভিন লুইস। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দুর্দান্ত খেলতে থাকেন ওপেনার জয়সওয়াল এবং অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন। মাত্র ৪৪ বল খেলে ৫৭ রানের জুটি গড়েন তারা। ২৩ বলে ৩৬ রান জয়সওয়াল আউট হলেও শেষ পর্যন্ত থাকেন সঞ্জু।
মাঝের দিকে মহীপাল লমরোরকে নিয়ে ক্রিজে রীতিমতো ঝড় তুলেন স্যামসন। ৫৩ বলে তারা দুজনে তুলেন ১০০ রান। ২৫ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন লমরোর। আর ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূর্ণ করার পর ৮০ রানে অপরাজিত থাকেন স্যামসন। মাত্র ৬০ বল খেলা তার ইনিংসটি সাতটি চার এবং তিনটি ছয়ে সাজানো। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে একটি করে উইকেট নেন তিনজন বোলার।
জবাবে পাওয়ার প্লেতেই একপ্রকার ম্যাচ থেকে ছিটকে যান রাজস্থান। তবে শেষের দিকে মোস্তাফিজ-সাকারিয়ায় লড়াইয়ে ফিরলেও খুব একটা সুবিধা হয়নি। হারের জন্য অধিনায়ক স্যামসন বাজে ফিল্ডিংকে দায়ী করতে পারেন। ফিফটি করার অনেক আগেই জয়সওয়ালের ক্যাচ হতে পারতো জেসন রয়। তবে ‘জীবন’ পেয়ে কাজটা ঠিকই করেছেন। ৪২ বলে ১ ছয় আর ৮ চারে ৬০ রানের ইনিংসের জন্যই পান ম্যাচ সেরার পুরস্কার। ১৯ তম ওভারে মোস্তাফিজের বলে টানা দুই চার মেরে জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলেন হায়দরাবাদ অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ৪১ বলে ৫ চার ১ ছয়ে ছুঁয়ে ফেলেন অর্ধশতকও।