মিয়ানমারের সংকট দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে, এমনকি এর বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে বৃহৎ সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘপ্রধান আন্তোনিও গুতেরেস। এমন ‘বহুমুখী বিপর্যয়’ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধভাবে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে এ আহ্বান জানান সংস্থাটির মহাসচিব।
গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, মিয়ানমারে সেনাশাসন প্রতিরোধের সুযোগ ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসতে পারে। সেখানে গণতান্ত্রিক শাসন ফেরাতে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক দেশগুলোর সাহায্য জরুরি।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সাংবিধানিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও ২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফল বহাল অপরিহার্য। এটি আদায়ে প্রতিবেশী দেশগুলো মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের অবিলম্বে মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক প্রচেষ্টা থাকতে হবে। এছাড়া রাখাইনে থেকে যাওয়া ছয় লাখ এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গাসহ দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য দ্রুততম সময়ে মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
সাধারণ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে সু চির সরকারকে হটিয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। সঙ্গে সঙ্গেই এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন দেশটির সাধারণ মানুষ। শুরু হয় সংঘাত। এতে প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজারের বেশি মানুষ।
এই সংকট সমাধানে দক্ষিণপূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানের পাঁচ দফা প্রস্তাবনায় সমর্থন জানিয়েছে জাতিসংঘ। ওই প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধ, গঠনমূলক আলোচনা, মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আসিয়ানের বিশেষ দূত নিয়োগ এবং মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি। গত আগস্টে ব্রুনেইয়ের দ্বিতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এরিওয়ান ইউসুফকে মধ্যস্থতাকারী দূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে আসিয়ান। এরই মধ্যে কাজও শুরু করেছেন তিনি।
বুধবারের প্রতিবেদনে ইউসুফের নিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘপ্রধান। তিনি বলেছেন, মিয়ানমার সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে পাঁচ দফা প্রস্তাবনা সময়মতো বাস্তবায়ন জরুরি। এ বিষয়ে আসিয়ানকে জাতিসংঘের বিশেষ দূতের সঙ্গে কাজ করতেও উৎসাহিত করেন গুতেরেস।