অবসরে গেলেও অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ফাইল ছবি

যেকোনো প্রকল্পে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনকি চাকরি থেকে অবসরে গেলেও অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার কথা বলেছেন সরকারপ্রধান।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাবনা অনুমোদন দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন। একনেক বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে ব্রিফ করেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ প্রকল্প বাস্তবায়নে যারা অনিয়ম করেছে তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। জড়িতদের মধ্যে যারা অবসরে গেছেন প্রয়োজন হলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

এম এ মান্নান বলেন, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের কাজ শেষ করতে চূড়ান্তভাবে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। যারা এই প্রকল্পের বিলম্বের ক্ষেত্রে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি সময়ের মধ্যে চলমান কাজ শেষ করতে বলেছেন।

মন্ত্রী বলেন, এই বিষয়ে আইএমইডি সচিবকে দিয়ে একটা কমিটি গঠন করি। সচিব একটা বস্তুনিষ্ঠ রিপোর্ট দিয়েছেন, সেটা আমি প্রধানমন্ত্রীকে পাঠাই। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ও গণপূর্ত বিভাগকে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমি অনুরোধ করেছি। আর নতুন পিডির মাধ্যমে কাজ শুরু করতে বলেছি।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, সরকারি অর্থায়নে মোট ২৭৫ কোটি ৪৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য একনেকে অনুমোদিত হয়েছিল প্রকল্পটি। ২০১২ সালে অনুমোদনের পর দফায় দফায় মেয়াদ ও ব্যয় বাড়লেও প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ হয়নি।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী আজকের একনেক বৈঠকে বলেছেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শুধু কারখানার ভেতরে করলে চলবে না। কারখানা এলাকায় ইটিপি স্থাপন করতে হবে। এছাড়া কোনো প্রকল্পে বৈদেশিক সহায়তা না পেলে রিজার্ভ থেকেও ঋণ নেওয়া যেতে পারে। তবে সেই ঋণ পরিশোধ করতে হবে রিজার্ভ থেকে। এছাড়া, দেশের সব এলাকায় সমানভাবে উন্নয়নকাজ করতে হবে। যাতে কোনো এলাকা অবহেলিত না হয়।

একনেক সভায় ৯টি প্রকল্পের অনুমোদন

এদিকে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ছয় হাজার ৫৫১ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নয়টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে নতুন প্রকল্প চারটি আর সংশোধিত পাঁচটি। এসব প্রকল্পে সরকারি অর্থায়নে তিন হাজার ৭৪২ কোটি ২৯ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব ঋণ ২৬ কোটি ২২ লাখ টাকা ও বৈদেশিক ঋণ দুই হাজার ৭৮২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।

একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলো হলো সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার (ফেজ-৩) (প্রথম সংশোধিত); কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ (প্রথম সংশোধিত); কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন, কুষ্টিয়া (দ্বিতীয় সংশোধিত); জগন্নাথপুর ও মোহনগঞ্জ উপজেলায় দুটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই) স্থাপন; টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার-লাউহাটি-সাটুরিয়া-কাওয়ালীপাড়া-কালামপুর বাসস্ট্যান্ড সড়ক আঞ্চলিক মহাসড়কের যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ; রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার নদীতীর সংরক্ষণ, ছোট নদী, খাল-বিল পুনঃখনন ও জলাবদ্ধতা নিরসন; শরীয়তপুর জেলার কীর্তিনাশা নদীর ডান ও বাম তীর রক্ষা; বড়পুকুরিয়া-বগুড়া-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি লাইন (প্রথম সংশোধিত) এবং খুলনা হতে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত)।

শেয়ার করুন