করোনা টিকার সার্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের আহ্বান বাংলাদেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনার ভ্যাকসিন
করোনার ভ্যাকসিন। ছবি : ইন্টারনেট

কোভিড-১৯ মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার ও এজেন্ডা-২০৩০ অর্জনে টিকার সার্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

বুধবার (৬ অক্টোবর) জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটির সাধারণ বিতর্কে দেওয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

universel cardiac hospital

রাষ্ট্রদূত ফাতিমা তার বক্তব্যে কোভিড-১৯ এ সৃষ্ট ভয়াবহ দৃশ্যপট তুলে ধরে কোভিড টিকা লাভে সার্বজনীন ও সাশ্রয়ী অধিকার নিশ্চিত করতে অংশীজনদের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে সবাই এ সংকট থেকে টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত পুনরুদ্ধারের সুযোগ পায়।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনের সাধারণ বিতর্ক পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য অনুসরণে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, টিকার উৎপাদনে সক্ষম উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে প্রযুক্তি ভাগ করে নিলে উৎপাদন ও বিতরণ পর্যায়ে বিশাল সক্ষমতা সৃষ্টি হবে, যা টিকা সমতা নিশ্চিত করতে পারবে।

জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানায়, সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটি কোভিড-১৯ মহামারি এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দ্বৈত সংকটকালে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘সংকট, প্রতিকূলতা মোকবিলায় সক্ষমতা এবং পুনরুদ্ধার -এজেন্ডা ২০৩০ এর অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা’। প্রতিপাদ্যের লক্ষ্য মহামারি থেকে টেকসই ও সক্ষমতাপূর্ণ পুনরুদ্ধারের জন্য সাহসী এবং উচ্চাভিলাসী বৈশ্বিক রোডম্যাপকে এগিয়ে নেওয়া এবং যথাসময়ে এজেন্ডা ২০৩০ অর্জন করা।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের নেওয়া সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলোর কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, আসন্ন জলবায়ু ও জীববৈচিত্র বিষয়ক রাষ্ট্র সম্মেলনে যাতে সাহসী ও উচ্চাভিলাসী ফলাফল অর্জিত হতে পারে সে বিষয়ে আরও গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা দরকার।

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ৪৮টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত ক্লাইমেট ভারনারেবল ফোরামের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হ্রাস, জলবায়ু-অর্থায়ন বৃদ্ধি, প্রযুক্তি হস্তান্তর সহজতর করা এবং অভিযোজন পদক্ষেপগুলোর উন্নয়নে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।

দেশের বাইরে থেকে আসা অর্থায়নের গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স, ওডিএ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বেসরকারি অর্থায়ন পুনরুজ্জীবিত করতে উন্নয়ন অংশীদারদের যে ভূমিকা রয়েছে তা পালনের প্রতি অনুরোধ জানান। রেমিট্যান্সের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় চাকরি পুন:প্রাপ্তিতে অভিবাসী কর্মীদেরকে অন্তর্ভুক্ত রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ভূমিকার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ডিজিটাল বৈষম্য দূরকল্পে সব অংশীজনদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ প্রক্রিয়ার উদাহরণ টেনে তিনি এলডিসিসহ সদ্য উত্তরিত দেশগুলোর জন্য সাহসী ও উচ্চাভিলাসী কর্মসূচি গ্রহণেরও অনুরোধ জানান।

বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে নারীদের তাৎপর্যপূর্ণ অবদানের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও উত্তরণ প্রচেষ্টায় অবশ্যই নারীদেরকে সম্মুখসারিতে স্থান দিতে হবে।

শেয়ার করুন