ই-কমার্স প্রতারণায় গ্রেফতারের পর রিমান্ডে আরজে নিরব

নিজস্ব প্রতিবেদক

হুয়ামূন কবির নিরব

গ্রাহকের অর্থ নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকমের হেড অব সেলস (কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন) অফিসার হুয়ামূন কবির নিরব ওরফে আরজে নিরব। গ্রেফতারের পর তাকে আদালতের মাধ্যমে একদিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের এডিসি হাফিজ আল ফারুক এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে এক ভুক্তভোগী গ্রাহক তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় আরজে নিরবের বিরুদ্ধে মামলা করেন। শুক্রবার ভোররাতে আদাবর থানা এলাকার নবোদয় হাউজিংয়ের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

universel cardiac hospital

জানা যায়, কিউকমের প্রতারণার মাস্টারমাইন্ড সাবেক এই রেডিও আরজে নিরব। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ডিজিটাল মাধ্যমে কিউকম সম্পর্কে প্রচারণা চালাতেন এবং নিজের পরিচিতির মাধ্যমে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এর আগে পল্টন থানার এক গ্রাহকের দায়ের করা প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের একটি মামলায় গ্রেপ্তার হন কিউকমের সিইও রিপন মিয়া। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। গত বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে রিপন মিয়াকে গ্রেফতারের পর সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘রিপন মিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন- কিউকম অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পণ্য কেনাবেচা করে আসছিল। তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ডিং করার জন্য তারা ব্যাপকভাবে মোটরসাইকেল বিক্রি করে। বিভিন্ন অফারের মাধ্যমে কিউকম লোভনীয় দামে মোটরসাইকেল বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছিল। বাজারে যেই মোটরসাইকেলের দাম এক লাখ ৬৭ হাজার টাকা, সেটি তারা এক লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দিত। বিপুলসংখ্যক ক্রেতা অর্ডার করে মোটরসাইকেল না পেয়ে হতাশায় ভোগে। এক্ষেত্রে রিপন মিয়া আরও জানান, তিনি মোটরসাইকেল ডেলিভারি না দিয়ে এক লাখ ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার চেক দিতেন গ্রাহকদের।

রিপন মিয়া ও আরজে নিরব গ্রেফতারের অনেক আগেই প্রতিষ্ঠানটি তাদের অফিস কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। কর্মীদের পাঠানো হয় হোম অফিসে। তখনই গ্রাহক পর্যায়ে আলোচনা শুরু হয় প্রতিষ্ঠানটির টিকে থাকার নিয়ে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়। যদিও হোম অফিস দেওয়ার কয়েকদিন পর প্রতিষ্ঠানটির সিইও এবং সাবেক আরজে নিরব কিউকমের ফেসবুক পেইজ থেকে লাইভে আসেন।

৪০ মিনিটের লাইভের একটি বড় সময় ধরে গণমাধ্যমের সমালোচনা করেন তারা। এ সময় রিপন মিয়া বলেছিলেন, ‘এ দেশে কিউকম একটা ফ্যাক্ট। কিউকমের নিউজ করলেই তা ভাইরাল হয়। তাই সবাই নিউজ করে। করেন, সবাই আমাদের বিরুদ্ধে নিউজ করেন। আমাদের তাতে কিছু যায় আসে না।’

একই বিষয় নিয়ে ওই লাইভে হাসি তামাশা করেন আরজে নিরব। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম তুলে ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিরোধিতা করেন তিনি।

এদিকে শুক্রবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনে নামে কিউকমে টাকা জমা দেওয়া গ্রাহকরা। এ সময় তারা কোনো ই-কমার্স বন্ধ না করে আইনি কাঠামোর মাধ্যমে তা পরিচালনাসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন