পাকিস্তানের পরমাণু বোমার জনক ও বিখ্যাত বিজ্ঞানী ড. আবদুল কাদির খান মারা গেছেন। রোববার (১০ অক্টোবর) মারা যান তিনি। সম্প্রতি তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
এদিকে ড. আবদুল কাদির খানের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পারভেজ খাত্তাক। তার মৃত্যুকে পাকিস্তানের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি বলেও আখ্যায়িত করেন তিনি।
রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে, শারীরিকভাবে অসুস্থ আবদুল কাদির খান স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। রোববার ভোরে তার স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতি হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পারভেজ খাত্তাক বলেন, ‘জাতির জন্য তার (ড. আবদুল কাদির খান) অবদানকে সবসময় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে পাকিস্তান! আমাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে মূল্যবান অবদানের জন্য পাকিস্তানি জাতি তার কাছে চিরঋণী।’
পাকিস্তানের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস অব পাকিস্তান (এপিপি)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্ট মাসের শেষের দিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ড. আবদুল কাদির খান। এরপর গত ২৬ আগস্ট তিনি রিসার্চ ল্যাবরেটরিজ হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তাকে রাওয়ালপিন্ডির সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
গত মাসে আবদুল কাদির খান অভিযোগ করেন যে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বা তার মন্ত্রিসভার কোনো সদস্যই তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেননি।
উল্লেখ্য, ১৯৩৬ সালে ভারতের মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে জন্মগ্রহণ করেন বিখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. আবদুল কাদির খান। পরে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পরিবারের সাথে তিনি পাকিস্তানে চলে যান। পাকিস্তানের পরমাণু কর্মসূচির জনক হিসেবে কাদির খান পাকিস্তানিদের কাছে জাতীয় বীর হিসেবে পরিচিত।
অবশ্য কয়েকটি দেশে পরমাণু অস্ত্রের গোপন তথ্য পাচারের দায়ে ড. আবদুল কাদির খানের সেই মর্যাদা কিছুটা খর্ব হয়। ২০০৪ সালে টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যের মাধ্যমে ইরান, উত্তর কোরিয়া ও লিবিয়ায় পারমাণবিক তথ্য পাচারের কথা স্বীকার করেন কাদির খান।
যদিও পরে আবদুল কাদির খান তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। এরপর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ তাকে ক্ষমা করে দিলেও গৃহবন্দী করে রাখেন।