থমথমে কুমিল্লা: বিজিবি মোতায়েন

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লা

একটি পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার অভিযোগ ওঠার পর কুমিল্লায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। নগরীর নানুয়ার দিঘিরপাড়ের একটি দুর্গাপূজার মণ্ডপ ঘিরে এই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত সদস্যদের পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদেরও নগরীতে মোতায়েন করা হয়েছে।

কুমিল্লা পূজা উদযাপন কমিটির সম্পাদক নির্মল পাল বলেন, পূজামণ্ডপের প্রতিমায় কোরআন রাখার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশ গিয়ে তা সরিয়ে নেয়। কিন্তু এর পরপরই একদল লোক বেশ কিছু পূজামণ্ডপে হামলার চেষ্টা চালায়।

universel cardiac hospital

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দিনভর চেষ্টা করেন।

জানা গেছে, দুটি মণ্ডপে ভাঙচুর চালানো হয়। তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এছাড়া নগরীর রাজগঞ্জ, চকবাজার, কান্দিরপাড় ও ঠাকুরপাড়া এলাকায় পূজার গেট ভাঙচুরে ঘটনা ঘটে।

বুধবার দুপুরের দিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। বিজিবির কুমিল্লা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ গোলাম ফজলে রাব্বি গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কুমিল্লায় যেন কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় তাই দুপুরে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘আমরা পবিত্র কোরআনের মর্যাদা বুঝি। যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতারা আমাদের বলেছেন, পূজা বন্ধ রাখতে। আমরা তাদের পূজা চালিয়ে যেতে বলেছি। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ইসলামেও কারও ধর্ম পালনে বাধা দেওয়ার বিধান নেই।’

পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ঘটনার সঙ্গে হিন্দু-মুসলমান যারাই জড়িত থাকুক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কুমিল্লার সব স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’

এদিকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জরুরি এক বার্তায় বলা হয়েছে, সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননা সংক্রান্ত খবর আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। খবরটি খতিয়ে দেখার জন্য ইতিমধ্যে আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করেছি। ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে যে কেউ এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকুক তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। সবাইকে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।

শেয়ার করুন