বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আরেকটি সুসংবাদ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২১ সালে চলতি মূল্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি হবে দুই হাজার ১৩৮ দশমিক ৭৯৪ ডলার৷ আর প্রতিবেশী ভারতের হবে দুই হাজার ১১৬ দশমিক ৪৪৪ ডলার৷ ফলে পরপর দুই বছর ভারতকে ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশ৷
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ প্রকাশিত ইকোনোমিক আউটলুক ২০২১ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য।
আইএমএফ বলছে, চলতি বছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৬ ভাগ। এর আগের বছর সাড়ে তিন ভাগ প্রবৃদ্ধি হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল সংস্থাটি। এছাড়া আগামী বছর সাড়ে ছয় ভাগ প্রবৃদ্ধি হবে বলেও জানায় আইএমএফ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার দেশে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। এ বছর মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৬ ভাগ ধরা হয়েছে।
এক বছর আগে আইএমএফ এবারের মতোই ডব্লিউইও প্রকাশ করে জানিয়েছিল, ২০২০ সালে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ, আর ভারতের প্রবৃদ্ধি কমে হবে ঋণাত্মক, অর্থাৎ (-) ১০ দশমিক ৩ শতাংশ৷ এর ফলে ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি হবে এক হাজার ৮৮৮ ডলার ও ভারতের হবে এক হাজার ৮৮৭ ডলার৷ অর্থাৎ বাংলাদেশ গতবার ঠিক এক ডলারে এগিয়ে ছিল৷
আইএমএফ এখন জানাচ্ছে, ২০২০ সালে প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ৷ তবে ভারতের প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক, (-) ৭ দশমিক ৩ শতাংশ৷ ফলে শেষ পর্যন্ত তাদের হিসাবে ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি হয় ১ হাজার ৯৬১ দশমিক ৬১৪ ডলার এবং ভারতের এক হাজার ৯২৯ দশমিক ৬৭৭ ডলার৷ আসলে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি বেশি হয়েছিল ৩১ দশমিক ৯৩৭ ডলার৷
মূলত এবার রেকর্ড পরিমাণ প্রবৃদ্ধি অর্জন করার কথা বলা হলেও গত বছরের উচ্চ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির প্রভাবেই ভারত এখনো পিছিয়ে আছে৷এমনকি আগামী বছরও ভারত পিছিয়ে থাকবে বলে মনে করে আইএমএফ৷
জিডিপিতে বাংলাদেশ পরপর দুই বছর ছাড়িয়ে গেলেও বেশ কিছু সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ ভারতকে আরও সাত বছর আগে ছাড়িয়ে গেছে৷ ভারতের মেয়েদের তুলনায় বাংলাদেশের মেয়েদের শিক্ষার হার বেশি ও নারীপ্রতি জন্মহার কম৷ নবজাতক ও পাঁচ বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হারও ভারতের চেয়ে কম বাংলাদেশে৷