১৬ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে প্রদর্শিত হবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ডকু-ড্রামা ‘দুইটি যুদ্ধের একটি গল্প‘।
ফুয়াদ চৌধুরীর পরিকল্পনা ও পরিচালনায় সত্য ঘটনা অবলম্বনে ডকু-ড্রামাটিতে মহি আলম চৌধুরীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিয়াদ রায়হান, মারজান চৌধুরীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন অহনা মিথুন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন- মির্জা শাখেছেপ শাকিব, সাইদুর রহমান পাভেল, জয়শ্রী মজুমদার লতা ও চট্টগ্রামের নান্দিমুখ থিয়েটারের একদল নাট্যকর্মী। ডকু-ড্রামাটি রচনা করেছেন ফাহমিদুর রহমান।
‘দেশটাকে এমনভাবে স্বাধীন করব যাতে দেশের সবাই দরজা খোলা রেখে ঘুমাতে পারে।’- এই মূলমন্ত্র নিয়েই মুক্তিযুদ্ধে নেমেছিলেন সার্জেন্ট মহি আলম চৌধুরী।
অকুতোভয় মহি আলম শত্রুর গুলিকে ভয় পেতেন না। ভয় পেতেন তিনি তার দায়িত্ব ঠিক করে পালন করতে পারবেন কি না। তাই তো দক্ষ আর দায়িত্বশীল নেতার মতোই প্রতিটা অপারেশনে তিনি সম্মুখে থেকে পরিচালনা করতেন।
তার নিষ্ঠা আর দক্ষসমর পরিকল্পনার জন্য একের পর এক যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে শত্রুমুক্ত করেছেন চট্টগ্রামের পটিয়া, আনোয়ারা, বোয়ালিয়া এলাকা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর বোর্ড অফিসের রাজাকার ক্যাম্পে অপারেশনের সময় রহস্যজনকভাবে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন। প্রচণ্ড গোলাগুলির মধ্যেও তার অনুরাগী সহযোদ্ধারা তাকে কাঁধে নিয়ে পাহাড়ি অরণ্যে দাফন করেন। কিন্তু তার মৃত্যুটা রহস্যই থেকে যায়।
এরপর কেটে যায় অনেকটা সময়। সহযোদ্ধা ছাড়া পরিবারের সদস্যদের কাছে একটা সময় পর্যন্ত অজানাই ছিল মহি আলমের এই বীরগাথা। অজানা ছিল কবরটিও। ভুলতে বসা জাতির এই সূর্যসন্তানের বীরোচিত অবদান একক প্রচেষ্টায় খুঁজে বের করেন শহিদ মহি আলমের ভ্রাতুষ্পুত্রী মারজান চৌধুরী। চাচার কবরটা এক নজর দেখার প্রত্যাশায় চলে আসেন অচেনা শহরের অচেনা গ্রামে। আর এসে দেখতে পান তার কল্পনার বীরযোদ্ধা চাচার বীরগাথা হারিয়ে যেতে বসেছে কালের গর্ভে।
বিষয়টা একেবারেই মেনে নিতে পারেন না। তাই তো পরিবারের বাধা আর সামাজিক প্রতিবন্ধকতা থাকার পরও নিজের গণ্ডির বাইরে পা না রাখা মেয়েটি শুধুমাত্র মনের জোরে একটা ছবির সূত্র ধরে আবিষ্কার করেন সেই কবরটি, সঙ্গে উদ্ধার করেন নিজের চাচার বীরত্বের স্বীকৃতি, প্রতিষ্ঠিত করেন শহিদ চাচার প্রাপ্য সম্মান।