কুমিল্লার ঘটনার জেরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বুধবার রাতে মুসল্লিদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে দুই হাজারজনকে। এখন পর্যন্ত পুলিশ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে।
শুক্রবার বিকালে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ-ফরিদগঞ্জ সার্কেল) মো. সোহেল মাহমুদ এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, হাজীগঞ্জ উপজেলায় মোট ১২টি পূজামণ্ডপ ভাঙচুর করা হয়েছে। এসব ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি এবং মন্দির কর্তৃপক্ষ একটি মামলা করেছে। এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বুধবার রাতে মুসল্লি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন নিহতের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুনুর রশিদ জানান, বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হচ্ছে। অন্যায়ভাবে কাউকে আটক করা হবে না।
বুধবার রাতের ঘটনায় নিহত আল আমিন, শামীম ও হৃদয়ের দাফন হাজীগঞ্জের নিজ নিজ গ্রামে সম্পন্ন হয়েছে। নির্মাণ শ্রমিক বাবলুর মৃতদেহ গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুন্দরগঞ্জের ভাগডাঙ্গায় নেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার অভিযোগে দুর্গাপূজার মণ্ডপ ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এর পরপরই একদল লোক বেশ কিছু পূজামণ্ডপে হামলার চেষ্টা চালায়। তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
এই ঘটনার জেরে বুধবার রাত আটটার দিকে হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় ‘তৌহিদি জনতা’র ব্যানারে মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিল থেকে লক্ষ্মীনারায়ণ আখড়ায় ঢিল ছোড়া হয়। একপর্যায়ে মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে চারজন নিহত হন। পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
এই ঘটনায় হাজীগঞ্জ উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ওই এলাকায় বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট সংযোগ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি।